লিটন হয়তো রান পাচ্ছে না, কিন্তু নিজের খেলা নিয়ে অনেক পরিশ্রম করছে। এটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিনিয়ত আরও ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে। প্লেয়াররা কখনো রান করবে, কখনো করবে না। এখন হয়তো লিটন ধারাবাহিক নয়। তবে সে কঠোর পরিশ্রম করছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’ -ডেভিড হেম্প, ব্যাটিং কোচ বাংলাদেশ
স্কোয়াডে ওপেনার চারজন। লিটন দাস অটোমেটিক চয়েস। তার সঙ্গী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের পছন্দের সৌম্য সরকার এবং দুই তরুণ তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ ইমন। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে চার ওপেনারের পারফরম্যান্স অতসী কাচের তলে ফেলে যাচাই-বাছাই করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। জিম্বাবুয়ে সিরিজের পারফরম্যান্স দিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের স্কোয়াড চূড়ান্ত করবে বিসিবি। স্কোয়াডের অধিকাংশ ক্রিকেটারই প্রায় চূড়ান্ত। বাকি যে ৩-৪ জন ক্রিকেটারকে নেওয়া হবে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের পারফরম্যান্সের বিচারে নেওয়া হবে। গত পরশু প্রথম টি-২০ ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন। মুঝারাবানির ইনসুইংয়ে পরিষ্কার বোল্ড হন ডানহাতি ওপেনার লিটন। অথচ অভিষেকেই ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন তানজিদ তামিম। স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে অপরাজিত থাকেন ৬৭ রানে। পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয়টি আজ। লিটন কি আজ খেলবেন? টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে কি একাদশ সাজাবে? তানজিদের আজকের সঙ্গী কে হচ্ছেন? সৌম্য সরকার, লিটন দাস না পারভেজ ইমন?
আজ জিতলে সিরিজে নাজমুল বাহিনী এগিয়ে যাবে ২-০ ব্যবধানে। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার সিরিজে সেরাটাই খেলতে চাইছে টাইগাররা। টাইগার ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প চাইছেন ক্রিকেটাররা যেন জয়ের জন্য সামর্থ্যরে পুরোটা দিয়ে খেলেন, ‘আমরা শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছি, যেন শক্তির জায়গা অনুযায়ী খেলতে পারি। ক্রিকেটারদের চেষ্টা করতে হবে সঠিকভাবে মানিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। একটা কথা সব সময় মাথায় রাখতে হবে, টার্গেট থেকে যেন দূরে সরে না যায়। আমরা যদি সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে ম্যাচ জিততে পারব।’ দুই দল এখন পর্যন্ত পরস্পরের বিপক্ষে টি-২০ ম্যাচ খেলেছে ২১টি। বাংলাদেশ জিতেছে ১৪টি এবং জিম্বাবুয়ে ৭টি।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টি-২০ ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে পাত্তাই দেয়নি টাইগাররা। ২৮ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ৮ উইকেটে। দিনের শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও ১৮ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নামা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন এবং অফ স্পিনার শেখ মেহেদি। এদের সাঁড়াশি আক্রমণে জিম্বাবুয়ে ১২৪ রান করে। ম্যাচ দুবার বৃষ্টিতে বাধাগ্রস্ত হলেও জয় আটকাতে পারেনি। বিশেষ করে দুই তরুণ তানজিদ ও তৌহিদ হৃদয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে পাত্তাই পায়নি সফরকারীরা। তানজিদ ৪৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৬৭ এবং তৌহিদ ৩৩ রানের ‘ক্যামিও’ ইনিংসটি খেলেন মাত্র ১৮ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায়। গতকাল টাইগার ব্যাটিং কোচ প্রশংসা করেন ওপেনার তানজিদের ব্যাটিংয়ের, ‘তানজিদ উন্নতি করছে। সে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে খেলেছে। সে এইচপি প্রোগ্রামের আওতায় ছিল। ফলে আমার তাকে আগে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আছে। সে প্রতি সপ্তাহে, প্রতি মাসেই উন্নতি করছে। ব্যাটিংয়ে আগের চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে। অবশ্য এখনো অনেক উন্নতির জায়গা আছে।’ গত এক বছর ধরেই ভালো ব্যাটিং করছেন তৌহিদ। মিডল অর্ডারে দারুণ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন এই ডানহাতি তরুণ ব্যাটার। তার প্রশংসায় টাইগার ব্যাটিং কোচ বলেন, ‘গ্রুপের সব ক্রিকেটারই দারুণ প্রতিভাবান। তৌহিদ হৃদয় এমন একজন যে, প্রতিনিয়ত নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি করতে চায়। কোচিংয়ের দিক থেকে আপনি এমন ক্রিকেটারই চাইবেন, যিনি খেলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তৌহিদ এমনই একজন ক্রিকেটার। সে অনেক পরিশ্রম করে। সব সময় উন্নতির চেষ্টা করে যায়।’
নিঃসন্দেহে লিটন দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। নিজের দিনে তার ব্যাটিং উপভোগ করার মতো। অথচ বিশ্বকাপের পর থেকেই ছন্দ হারিয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত যে চারটি ম্যাচ খেলেছেন, স্কোরগুলোই বলে কতটা ছন্দহীন তিনি- ১, ৭, ৩৬ ও ০। অথচ একাই বহু ম্যচ জিতিয়েছেন। লিটন ছন্দহীন হলেও পরিশ্রমের প্রশংসা করেছেন হেম্প, ‘লিটন হয়তো রান পাচ্ছে না, কিন্তু নিজের খেলা নিয়ে অনেক পরিশ্রম করছে। এটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিনিয়ত আরও ভালো করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সে। প্লেয়াররা, কখনো রান করবে, কখনো করবে না। এখন হয়তো লিটন ধারাবাহিক নয়। তবে সে কঠোর পরিশ্রম করছে। এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’