আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চারিদিকে পরিবর্তনের জোয়ার বইছে। ক্রীড়াঙ্গনও এর বাইরে নয়। এক যুগ ধরে দেশের শীর্ষ ক্রীড়া ফেডারেশন ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে থাকা নাজমুল হাসান পাপন পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। নতুন সভাপতি হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। আরও ফেডারেশনের পরিবর্তন আসছে তা নিশ্চিত। কথা হচ্ছে ক্লাবগুলোর কী অবস্থা হবে? দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা মোহামেডানের দীর্ঘদিন ধরে টালমাটাল অবস্থা। পেশাদার ফুটবল লিগ আগমনের পর ঢাকা আবাহনী ৬, বসুন্ধরা কিংস ৫, শেখ জামাল ধানমন্ডি ৩ ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র একবার চ্যাম্পিয়ন হলেও মোহামেডান শিরোপাহীন। সেই ২০০২ সালে তারা শেষ বার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
মোহামেডানের মতো দেশখ্যাত ক্লাব ২২ বছর ধরে লিগ জেতেনি তা ভাবায় যায় না। কারও কারও ধারণা আওয়ামী লীগ সরকার মোহামেডানকে ঘুরে দাঁড়াতে দেয়নি। তারা আবাহনীকে গুরুত্ব দিয়েছে। এ অভিযোগ কতটুকু সত্য তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। কেননা ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের অধঃপতনের পেছনে মূলত সাংগঠনিক ব্যর্থতায় দায়ী। একে অপরের মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্যাসিনোসহ নানা বিতর্ক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে মোহামেডানকে ঠেলে দেয় ধ্বংসের মুখে। শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেট ও হকিতেও দৈন্যদশা নেমে এসেছে। ২০০৮ সালে শেষবার প্রিমিয়ার ক্রিকেটে তারা চ্যাম্পিয়ন। যোগ্য ও নিবেদিত প্রাণ সংগঠকদের দূরে সরিয়ে হকিতে বিরাজ করছে অন্ধকার।
২০২২-২৩ মৌসুমে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আলোচনায় উঠে আসে মোহামেডানের নাম। গেল মৌসুমে পেশাদার লিগ, ফেডারেশন কাপ এবং স্বাধীনতা কাপ তিন আসরেই রানার্সআপ হয়। চ্যাম্পিয়ন না হলেও দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটে প্রিমিয়ার লিগে রানার্সআপ হয় মোহামেডান। সমর্থকদের আশা সরকার পরিবর্তনের পর সাদা-কালোদের পালে নতুন করে হাওয়া লাগবে। এ ব্যাপারে মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ বলেন, ‘কষ্ট লাগে প্রিয় ক্লাবটি যেন ক্রীড়াঙ্গন থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল। আমি বলব কোনো রাজনৈতিক কারণে নয় মোহামেডান পিছিয়ে গেছে ত্যাগী সংগঠকদের কারণে। মোহামেডানকে জানপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে এমন সংগঠকের সংখ্যা প্রায় শূন্য বলেই এ বেহাল দশা।’