সর্বশেষ ২০ ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি মাত্র একটি। সেটা আবার ছয় ইনিংস আগে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেছিলেন টি-২০ বিশ্বকাপে। ৯৫ টি-২০ ক্যারিয়ারের সর্বশেষ বিশ ইনিংসে লিটন দাসের পারফরম্যান্সের যে গ্রাফ, তাতে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াই কঠিন। অথচ তিনিই এখন বাংলাদেশ টি-২০ দলের অধিনায়ক। বিসিবি তাকে দায়িত্ব তুলে দিয়েছে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথ টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটার গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার অধিনায়কত্বে টাইগাররা আগামীকাল ২ ম্যাচ টি-২০ সিরিজ খেলতে ‘মরুরাজ্য’ সংযুক্ত আরব আমিরাত যাচ্ছে। অধিনায়ক লিটন নতুন করে দায়িত্ব পেয়ে গতকাল মিডিয়ার মুখোমুখিতে দলের ভবিষ্যৎ, নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলেন। অধিনায়কত্বকে ইতিবাচক ধরে কোনো ধরনের চাপ মনে করছেন না বলেন লিটন। তিনি বলেন, ‘চাপের কিছু নেই। অধিনায়ক যখন ছিলাম না তখনো খারাপ করেছি। এখনো এমন না যে, অধিনায়ক হলে আবার খারাপ করব। এটা বাড়তি সুবিধা হতেও পারে। যেহেতু একটা নতুন সুযোগ এসেছে। সবাই বিশ্বাস করি, যে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে তার দুই-এক দিন পর হলেও ফল আসে। আমি ওই জায়গায় আছি। চেষ্টা করব ইতিবাচকভাবে চিন্তা করার যেন ফলটা আমার দিকে নিয়ে আসতে পারি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে অধিনায়ক ছিলেন লিটন। তার নেতৃত্বে টাইগাররা ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ক্যারিবীয়দের। যদিও অধিনায়ক লিটনের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। তিন ম্যাচে তার মোট রান ছিল ০, ৩ ও ১৪। ছন্দহীনতায় ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজে তাকে স্কোয়াডে রাখেননি টিম ম্যানেজমেন্ট। সুযোগ পাননি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। অথচ তার ওপরই টি-২০ ক্রিকেটে আস্থা রেখেছেন ম্যানেজমেন্ট। ৯৫ ম্যাচে লিটনের রান ২০২০ এবং স্ট্রাইকরেট ১২৪.৭৬। আগামীকাল তার নেতৃত্বে শারজাহতে দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাচ দুটি ১৭ ও ১৯ মে। তার নেতৃত্বে আমিরাত ও পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিল টাইগারদের। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের জন্য পাকিস্তান সিরিজ ঝুলে গেছে। তাই বিসিবি শুধু আমিরাতেই পাঠাচ্ছে দল। সিরিজ দিয়ে ছন্দে ফিরতে চাইছেন অধিনায়ক লিটন। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ মনে হয় ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছি। হ্যাঁ, আমি একটা খারাপ সময় পার করছিলাম। আমার ব্যাটে রান হচ্ছিল না। এরপর বিপিএল, ডিপিএলে আমি চেষ্টা করেছি। ক্রিকেটার হিসেবে আমি এটুকুই বলতে পারি, যে কোনো ক্রিকেটার সর্বোচ্চ তার চেষ্টাই করতে পারে।’
বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালসের পক্ষে খেলেছিলেন। পারফরম্যান্স করতে পারেননি। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেটে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ৬ ম্যাচে ২টি হাফ সেঞ্চুরি করেন। যার একটি ছিল ৮৩ রানের। টাইগার অধিনায়ক চেষ্টা করছেন। পারছেন না। অনেক সময় চেষ্টা করেও হয় না। এটা ভালো করে জানেন। সেজন্য চেষ্টা করে যাবেন বলেন টাইগার অধিনায়ক, ‘কিছু কিছু সময় থাকে এমন যে, অনেক চেষ্টা করেও হয়তো ফল পায় না। অন্য দিকে এমনও হয়, কোনো ক্রিকেটার দু-একটি সিরিজ খারাপ খেলে, আবার কামব্যাক করে। আমিও ওই চেষ্টাই করব। আমার খেলার ধরন, আমি যে ধরনের ক্রিকেটার সেটা যেন বাংলাদেশকে দিতে পারি। আমি পারফর্ম করলে বাংলাদেশ টিমেরও সাহায্য হবে।’
ছন্দে ফিরতে মরিয়া লিটন মূলত একজন ওপেনার। স্ট্রোক খেলেন সাবলীল। সহজাত প্রতিভার টাইগার অধিনায়ক দলের প্রয়োজনে এবং নিজেকে ফেরাতে যে কোনো পজিশনে খেলতে প্রস্তুত, ‘এ মুহূর্তে আমি কী চাই, আমার কী পছন্দ, অন্তত টি-২০ ক্রিকেটে এ জিনিসটা দেখতে চাই না। আমি চাই, দল যাকে যেখানে বলবে, সে যেন সেখানে খেলতে প্রস্তুত থাকে। অবশ্যই এমন কোনো দিন আসবে না যে, আমি সাত নম্বরে ব্যাটিং করছি। তাহলে দল আমার থেকে কিছু পাবে না।’ আমার কাছ থেকে যেটা পাবে, সেই জিনিসটাই আমাকে দেবে দল। আমিও সেই জিনিসটাই দেওয়ার চেষ্টা করব।’ দলে লিটন ছাড়া ওপেনার রয়েছেন সৌম্য সরকার, তানজিদ তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন।