শেষ রাউন্ড শুরুর আগেই প্রায় নিশ্চিত ছিল ঢাকা বিভাগের চ্যাম্পিয়নশিপ। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। কাল খুলনা বিভাগের বিপক্ষে এগিয়ে যেয়ে বোনাস পয়েন্ট নিয়ে সেই আনুষ্ঠানিকতাটুকু সারল ঢাকা। বোনাস পয়েন্টের সুবিধা নিয়ে ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেটের নতুন চ্যাম্পিয়ন ঢাকা বিভাগ। অবশ্য খেলা এখনো দুদিন বাকি।
ছয় সপ্তাহ বিরতির পর গত ১২ এপ্রিল মাঠে গড়ায় জাতীয় ক্রিকেটের ১৫ নম্বর আসর। পঞ্চম রাউন্ডের পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা খেলতে নামে শেষ রাউন্ড। ষষ্ঠ রাউন্ড শুরুর আগে ঢাকার পয়েন্ট ছিল ১১১ এবং রাজশাহীর ৯০। দুই দলের পয়েন্টের ব্যবধান ছিল ২১। শিরোপা জিততে হলে ঢাকার দরকার ছিল ৪ পয়েন্ট। প্রথম ইনিংসে খুলনাকে ২৪৩ বেধে রেখে তুলে নেয় ৩ বোনাস পয়েন্ট। এরপর নুরুল হাসান সোহানের সেঞ্চুরিতে ২৫২ রান তুলে ভাণ্ডারে যোগ করে আরও দুই বোনাস পয়েন্ট। এছাড়া এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়তি এক বোনাস পয়েন্টও যোগ হয় ভাণ্ডারে। সব মিলিয়ে ৬ বোনাসসহ ১১৭ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে নেয় ঢাকা। জাতীয় ক্রিকেটে ঢাকা সবশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০৬-০৭ মৌসুমে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ম্যানেজার আলী হোসেন, 'ক্রিকেটাররা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছেন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো দলকে অভিনন্দন।'
কঙ্বাজার স্টেডিয়ামে খুলনাকে প্রথম ইনিংসে ২৪৩ রানে অলআউট করে ঢাকা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৩৯ রান তুলতে হারিয়ে বসে ৭ উইকেট। তখন মনে হচ্ছিল, শঙ্কায় পড়ে যাচ্ছে ঢাকার শিরোপা। অষ্টম উইকেট জুটিতে নুরুল হাসান ও অধিনায়ক শরীফ ৮৪ রান যোগ করলে হাফ ছেড়ে বাঁচে চ্যাম্পিয়নরা। শেষ পর্যন্ত নুরুল হাসানের সেঞ্চুরিতে ২৫২ রান করে ঢাকা। নুরুল করেন ১০১ রান। খুলনার পক্ষে আবারও সাফল্য পান বাঁ হাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক রাজ। কাল ১০১ রানে নেন ৬ উইকেট। আগের রাউন্ডে তিনি নিয়েছিলেন ১৩ উইকেট। এরমধ্যে ৯১ রানে খরচে ছিল ৯ উইকেট। ৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ৯৪ রান যোগ করে খুলনা। এগিয়ে যায় ৮৫ রানে। ম্যাচের এখনো বাকি দুই দিন। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৫৩ রান করে এগিয়ে যায় ১৭২ রানে। রাজশাহীর বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১২৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ঢাকা মেট্রো। তবে রাজশাহীর প্রথম ইনিংসও বেশিদূর যেতে পারেনি। আউট হয় ২০৭ রানে। ৮১ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে মেট্রোপলিটন রান করে ৫ উইকেটে ২৫৩ রান। বিকেএসপিতে সিলেটের চেয়ে চট্টগ্রাম এগিয়ে রয়েছে ১৭৫ রানে। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ২১৩ রান করে। জবাবে প্রথম ইনিংসে সিলেটের সংগ্রহ ছিল ১৯০ রান। ২৩ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৫২ রান করে চট্টগ্রাম। ফতুল্লাহ খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংস শেষ করার আগেই বরিশালের চেয়ে ৫৭ রানে এগিয়ে রয়েছে রংপুর। বরিশালের ২৮৯ রানের জবাবে রংপুর কাল দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ৩৪৬ রান তুলে। রংপুরের পক্ষে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধীমান ঘোষ রান করেন ১৪৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা : প্রথম ইনিংস, ২৪৩ ও দ্বিতীয় ইনিংস, ৯৪/৩, ৩৬ ওভার ( এনামুল বিজয় ৩৬, ইমরুল কায়েশ ৩৮। শুভাগত হোম ২/৮)।
ঢাকা : ২৫২/১০, ৭৯.২ ওভার (আব্দুল মজিদ ৪২, রনি তালুকদার ৪২, নুরুল হাসান ১০১, মোহাম্মদ শরীফ ৩৬। আব্দুর রাজ্জাক ৬/১০১)।
ঢাকা মেট্রো : প্রথম ইনিংস, ১২৬ ও দ্বিতীয় ইনিংস, ২৫৩/৫, ৭৬ ওভার ( সাদমান ইসলাম ৮৫, সৈকত আলী ৯৪, আসিফ আহমেদ ৫২*। তাইজুল ইসলাম ২/৫৪, সাঞ্জামুল ইসলাম ২/৪৭)।
রাজশাহী : প্রথম ইনিংস, ২০৭/১০, ৬২.১ ওভার ( সাবি্বর রহমান ৬৪, মুশফিকুর রহিম ২২, মুক্তার আলী ৩৯। শহীদ ৩/৩৩, আবু বকর সিদ্দিক ৪/৩৬)।
বরিশাল : প্রথম ইনিংস ২৮৯/১০, ৬৬ ওভার ( সোহাগ গাজী ৮৭, কামরুল ইসলাম ৫২, শাহীন হোসেন ৪৫, নুরুজ্জামান ৪১। সোহরাওয়ার্দী শুভ ৩/৭৪।
রংপুর : প্রথম ইনিংস, ৩৪৬/৫, ১১২ ওভার ( ধীমান ঘোষ ১৪৯, তানভীর হায়দার ৩৮*, নাঈম ইসলাম ৬০। মনির হোসেন ৩/৯১)।
চট্টগ্রাম : প্রথম ইনিংস, ২১৩ ও দ্বিতীয় ইনিংস, ১৫২/৩, ৪৪.৪ ওভার ( নাজিমউদ্দীন ৬৮, মুমিনুল হক ৫৩*। আহমেদ সাদিক ৩/৩৮)।
সিলেট : প্রথম ইনিংস, ১৯০/১০, ৭৫.৩ ওভার ( রাজিন সালেহ ৫৯, অলক কাপালি ২৮, এনামুল জুনিয়র ২৩। ফয়সাল হোসেন ৫/৩৬)। আলী আকবর ২/৭১)।