তাৎক্ষণিকভাবে জীবন বাঁচানোর জন্য মানুষ অপারেশনের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু কেন আমরা এই ইমার্জেন্সির কাছে নিজেকে সঁপে দেব? বিষয়টি অনেকটা এরকম, আপনি গাড়ি চালাচ্ছেন, কিন্তু হঠাৎ করে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে আপনার কোনো উদ্বেগই নেই। চলার পথ মসৃণ রাখতে ইঞ্জিনের সুরক্ষা করতে হবে। ঠিক একইভাবে আমাদের দেহ একটি মূল্যবান ও বিস্ময়কর মেশিন বা যন্ত্র যা সৃষ্টি করেছেন স্রষ্টা। এই দেহযন্ত্রকে সচল রাখতে হলে বিশেষ যত্ন নিতে হয়। চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নতির যুগে হার্টের রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বর্তমানে এটি এক আতঙ্কের নাম।
আমরা অনেকেই জানি না, স্বল্প ওষুধ সেবনের মাধ্যমে হার্টের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করা যায়। তবে এটি তাদের জন্যই প্রযোজ্য যারা- আর্টারিতে ব্লকেজ অথচ রোগী অপারেশনে ভয় পান বা অপারেশনের জন্য অনুপযুক্ত যেমন অধিক বয়স, শারীরিক অক্ষমতা, হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা অনেক কম, বা স্টান্টিং করতে ব্যর্থ। অনেকেরই হেলথ পলিসি আছে, খরচ জোগায় ইনসিওরেন্স কোম্পানি। কিন্তু শরীরের যে ক্ষতি হয়ে যায়, তার পূরণ কিভাবে হবে? মোট রোগীর তিন ভাগের এক ভাগ হৃদরোগীর ক্ষেত্রেই হার্ট অ্যাটাকের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো প্রকাশ পায় যে, তার হৃদরোগ রয়েছে। শতকরা ৩৫ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই হার্ট অ্যাটাকের মাধ্যমে হঠাৎ মৃত্যু হয়। অন্যদিকে এসব আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষমতাও নেই বহু মানুষের। বুকের অস্বস্তি যাদের রয়েছে তাদের ভেতর হৃদরোগের লক্ষণ হিসেবে শনাক্ত করা যায় মাত্র ৩০ ভাগ । ৭০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই অজান্তে বা নিঃশব্দে বেড়ে ওঠে হার্টের এই রোগ। প্রথম অবস্থায়ই রোগ শনাক্ত করাই হলো হৃদরোগ মুক্তির একমাত্র উপায়।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ।