রাজধানীর ধানমন্ডি মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বেলা ২টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই ম্যাজিস্ট্রেট মো. কবির মাহমুদ ও অতুল মণ্ডল ধানমন্ডি মাঠের গেট খুলে দেন এবং সেখানে দুটি সাইনবোর্ড লাগান। এর আগে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষকে ধানমন্ডি মাঠ উন্মুক্ত করে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন। ম্যাজিস্ট্রেট অতুল মণ্ডল জানান, ক্লাবের নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্য থেকে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মারফত আলীর কাছ থেকে 'ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্বানুমোদন ছাড়া এ মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে কোনো বাধা দেওয়া হবে না' মর্মে একটি মুচলেকাপত্র নেন তারা। আদালতের নির্দেশ অনুসারেই এ অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং গেটটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
ধানমন্ডি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে বন্ধ থাকা মাঠটি উৎসুক অনেকেই দেখতে আসছেন। তাদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। মাঠের ভেতরে নির্মাণাধীন ক্রীড়া স্থাপনাগুলোও বন্ধ দেখা গেছে। এ বিষয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, 'ধানমন্ডি মাঠ এখনই উন্মুক্ত হয়েছে, এটা আমরা মনে করি না। কারণ ধানমন্ডি ক্লাবের নামে যে স্থাপনাগুলো রয়েছে সেগুলো এখনো ভাঙা হয়নি। সর্বসাধারণের জন্য মাঠটি সিটি করপোরেশন বৈধতা দিয়েছে মাত্র। যতক্ষণ পর্যন্ত মাঠের স্থাপনা অপসারণ না হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা মাঠটি উন্মুক্ত মনে করছি না। তবে আশা করি, আগামীকাল সাধারণ মানুষ তাদের বাচ্চাদের নিয়ে মাঠে প্রবেশ করবে।' তিনি আরও জানান, আগামী রবিবার ধানমন্ডি মাঠ নিয়ে আদালতের শুনানি রয়েছে। সে রায় কার পক্ষে যায়, তার পরই সবকিছুর মীমাংসা হবে।
ধানমন্ডি ৮ নম্বরে গণপূর্ত বিভাগের মালিকানাধীন মাঠটি একসময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। তবে ২০০৯ সালে মাঠটি ঘিরে দেওয়া হয়। দুই বছর ধরে মাঠে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে থাকা ওই মাঠে গত মার্চে দুটি ব্যাডমিন্টন, দুটি টেনিস ও একটি বাস্কেটবল কোর্ট নির্মাণ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
রাজধানীর ধানমন্ডি খেলার মাঠ জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ১৯ এপ্রিল একটি মামলা হয়। ওইদিন সকালে আন্দোলনকারীরা মাঠে ঢুকে সমাবেশ করার পর দুপুরে ফটক ভেঙে মাঠে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। মামলায় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবিব ও সালমা এ সফি এবং বাংলাদেশ উইমেন্স স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন্নাহার ডানার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়। মঙ্গলবার চারজন জামিন পান।
খেলার মাঠে প্রবেশের অভিযোগে করা মামলায় মঙ্গলবার জামিন পান মোবাশ্বের হোসেন, ইকবাল হাবিব, সালমা এ সফি ও কামরুন্নাহার। বুধবার সকালে তারা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম এম এ সালাম তাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।