হজাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় কতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন?
আমি জাতীয় প্রতিযোগিতায় মোট ২১ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এর মধ্যে প্রথম তিনবার (১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯) কাউন্ট হয়নি। কারণ তখন বাংলাদেশ ফিদের সদস্য পায়নি। তবে সব মিলে আমি ২৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ১০ বার দলীয়।
হআপনি প্রথম এবং সর্বশেষ কবে জাতীয় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন?
পাকিস্তান আমলে তো মেয়েদের দাবায় অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না। দেশ স্বাধীনের পর মেয়েদের এই খেলায় আসার সুযোগ তৈরি হয়। আমি প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়েছি ১৯৭৭ সালে এবং শেষ ২০১০ সালে।
হআপনি কি গিনেস বুক অব রেকর্ডের জন্য কখনো আবেদন করেছিলেন?
আবেদন তো করেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষ আমাকে জানানোর কথা, কিন্তু এখনো হ্যাঁ বা না কিছুই জানায়নি। আসলে এটা মনে হয় শুধু ব্যক্তিগত উদ্যোগে হবে না। ফেডারেশনকে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু কেউ তো উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমার জানা মতে, বিশ্বে ১৮ বার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন কোনো নারী ক্রীড়াবিদ নেই। আমার বিশ্বাস, ফেডারেশন উদ্যোগ নিলে আমার নাম গিনেস বুকে ঠাঁই পেত।
হদাবায় এখন নতুন মেয়ে আসছে না কেন?
মেয়েরা ভালো না করার কারণ হচ্ছে পরিচর্যার অভাব। ভালো সংগঠক নেই, তাই ভালো পরিকল্পনাও হয় না। এ কারণেই আমাদের মেয়েরা পিছিয়ে পড়ছে।
হদাবায় এখন নিয়মিত টুর্নামেন্ট হয় না কেন?
প্রধান কারণ হচ্ছে আর্থিক সমস্যা। তাছাড়া নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকের অভাব। দাবা তো আর ফুটবল-ক্রিকেটের মতো মাঠের খেলা নয়। তাই স্পন্সররাও এগিয়ে আসে না। তাই স্পন্সর পেতে হলে সংগঠকদের অনেক কষ্ট করতে হবে। কিন্তু এখন আর কেউ কষ্ট করতে চায় না।
হবাংলাদেশে গ্রান্ড মাস্টার বাড়ছে না কেন?
টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা খুবই ঘন ঘন। যাতে আমরা বেছে বেছে খেলতে পারি। অথচ আমরা খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকি কিন্তু টুর্নামেন্ট নেই। এ কারণেই আমাদের এখানে গ্রান্ড মাস্টার বাড়ছে না। বাংলাদেশে যখন একটা গ্রান্ড মাস্টার তখন ভারতেও ছিল একটাই। অথচ এখন ভারতে কতগুলো গ্রান্ড মাস্টার! কারণ ওরা নিয়মিত টুর্নামেন্ট খেলে। এ কারণেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি।
হআপনি যে এত বেশিবার দাবার শিরোপা জিতেছেন, অনুপ্রেরণা কোথায় পেয়েছেন?
দাবা খেলা কিন্তু আমার পেশা নয়। আমি খেলতাম মনের আনন্দে। কখনো কখনো মনে হতো এত বেশিবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়ে কী লাভ? অনেকবার ইচ্ছা করেই চ্যাম্পিয়নশিপ মিস করেছি। তখন যদি জানতাম গিনেস রেকর্ডের কথা তাহলে মিস করতাম না। তা ছাড়া অন্য মেয়েরা যেখানে শপিং কিংবা ট্যুরে যেতে ভালোবাসে সেখানে আমার পছন্দ শুধুই দাবা। মজার ব্যাপার হলো, ছোটবেলায় যখন বাবা খেলা দেখতাম আমি কিছুই বুঝতাম না কিন্তু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সেই ছোটবেলা থেকেই আমি দাবার প্রতি ভক্ত।
হহ্যান্ডবলের খ্যাতিমান সংগঠক এম এ হামিদের স্ত্রী, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ এবং স্কোয়াশ ফেডারেশনের সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর হামিদের মা- এই পরিচয়গুলো আমার কেমন লাগে?
আসলে ক্রীড়া পরিবারের সদস্য হিসেবে ভালো লাগা খারাপ লাগা দুই-ই আছে। হয়তো না খেলে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে আমাদের অনেক টাকা হতো। তবে বলতে পারি এই পরিচয়গুলো আমাকে অনেক শান্তি দেয়।