সফল হতে হলে মানসিকভাবে উজ্জীবিত থাকতে হবে। হতে হবে আত্মবিশ্বাসী। টি-২০ বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর ক্রিকেটাররা এখন পুরোপুরি বুঝতে পেরেছেন বিষয়গুলো। বুঝেছেন বলেই পিক পারফরম্যান্স কোচের আড়ালে মনোবিদ আলী আজহার খানের ক্লাসে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন জাতীয় দলের বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটাররা। তাই মনোবিদের প্রথমদিনের ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন ৩২ ক্রিকেটার। কাল জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ব্যক্তিগতভাবে দেখা করেছেন মনোবিদের সঙ্গে। আলাপ করেছেন নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে। উপায় জানতে চেয়েছেন সমস্যা উত্তোরনের। মনোবিদের সঙ্গে দেখা করে উপকৃত হওয়ার কথা বলেছেন নাসির হোসেন, শাহরিয়ার নাফিস, আব্দুর রাজ্জাক রাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজারা।
মাশরাফি বিন মর্তুজা ভুগছেন ইনজুরিতে অনেক দিন। ইনজুরির জন্য তার ক্যারিয়ার শঙ্কার মুখে। ইনজুরি থেকে মুক্ত হয়ে কিভাবে আবার পুরনো ছন্দে ফেরা যায় এবং কিভাবে হতাশা ঝেড়ে ফেলে যায়, তা জানতে দেশ সেরা পেসার কথা বলেছেন মনোবিদের সঙ্গে। মনোবিদ আজহার তার কথা শুনেছেন। উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। মনোবিদ মনে করেন ইনজুরি একজন খেলোয়াড়ের আত্মবিশ্বাসে বাধা হয়ে দাড়ায়, 'ইনজুরির জন্য অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েন। ইনজুরির জন্য ইতিবাচক চিন্তা করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আপনি হতাশ থাকলে ইনজুরি সারতে সময় লাগে। এটা বিজ্ঞানের ভাষা। আমাদের দেখাতে হবে, হতাশা থেকে কিভাবে বের হয়ে আসা যায়। যখন আপনি হতাশ থাকবেন, তখন অনুশীলনেও সর্বোচ্চটা দিতে পারেন না।'
বেশ অনেক দিন ধরে জাতীয় দলে নেই। ফিরতে চেষ্টা করছেন শাহরিয়ার নাফিস। ঘরোয়া ক্রিকেটে চেষ্টা করছেন পারফরম্যান্স করতে। মনোবিদের ক্লাসে যোগ দিয়েছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার। মিরপুর একাডেমির কনফারেন্স রুমে প্রথম দিন ক্লাস করেছেন সবার সঙ্গে। কাল ছিল ব্যক্তিগত সেসন। এটাকে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। মনোবিদদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপে উপকৃত হয়েছেন মনে করেন তিনি, 'ওনি আলাপ করেছেন নিজস্ব আত্দবিশ্বাস বাড়ানো এবং নিজেকে কিভাবে উদ্দীপ্ত করা যায়, সেগুলো নিয়ে। পজিটিভ বিষয়গুলোকে কিভাবে আমরা কাজে লাগাতে পারি। ওনার সঙ্গে আলাপে মনে হয়েছে, যদি আমরা তার বাতলে দেওয়া পথে হাঁটতে পারি, তাহলে অবশ্যই উপকৃত হবো। আর না পারলে সফল হতে পারব না।'
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমের পর দলের অন্যতম ভরসার নাম নাসির হোসেন। অথচ গত এক বছর ধরে নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন এই ক্রিকেটাররা। কিছুদিন আগেও বহু জয় উপহার দিয়েছেন দলকে। তাই সতীর্থরা তাকে ডাকতেন 'দ্য ফিনিশার' বলে। কিন্তু এখন ফর্মে ফিরতে লড়াই করছেন নাসির। কাল তিনিও দেখা করেছেন মনোচিকিৎসক আজহারের সঙ্গে। আলাপ করেছেন ব্যাড প্যাচ থেকে বের হওয়ার রাস্তা পেতে। আলাপ করে উপকৃতই হয়েছেন মনে করেন নাসির, 'আগে জানতাম না, চাপে থাকলে কিংবা পারফরম্যান্স করতে না পারলে তখন কি করা উচিত। ওনার সঙ্গে আলাপ করে বুঝতে পেরেছি কিভাবে আবারও ছন্দ ফিরে পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এখন আমি অনেক আত্মবিশ্বাসী। আমি মনে করি আমার সঙ্গে যারা ক্লাস করেছেন, তাদেরও আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।'
আজ আবারও ক্রিকেটারদের সঙ্গে বসবেন মনোচিকিৎসক। সেখানে তিনি পরিস্কার করে দিবেন, কিভাবে আত্মবিশ্বাসটা ধরে রাখা যায়। ক্রিকেটাররাও এখন চাইছেন আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে পুরনো ছন্দে ফিরতে।