শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব আঙিনায় প্রতি শুক্রবারই পরিবেশবাদীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করত। গতকাল এ এলাকায় কোনো কর্মসূচি ছিল না। কেননা পরিবেশবাদীদের লক্ষ্য পূরণ করেছে ঢাকা সিটি (দক্ষিণ) করপোরেশন। বৃহস্পতিবার সকালেই ক্লাবের মূল গেটে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে সর্ব সাধারণের জন্য মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে ধানমন্ডি মাঠে প্রবেশে কারও বাধা থাকবে না। যাক উন্মুক্ত হলেও মাঠে এখনো খেলার জন্য ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। সবাই জানার পর আবারও আগের মতো মাঠ ব্যস্ত হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন পরিবেশবাদীরা। কিছুদিন আগে জাঁকজমক সংবাদ সম্মেলন করে ক্লাব সভাপতি মনজুর কাদের ঘোষণা দেন এ মাঠ অবশ্যই উন্মুক্ত থাকবে তবে তা হবে শুধু এলাকার এলিটদের জন্য। এখন সবার জন্য মাঠে খেলার অনুমতি দেওয়া হলো? এ ব্যাপারে গতকাল টেলিফোনে কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন সাইন বোর্ড টাঙানোর পর আমার কিছু বলার নেই। তবে কষ্ট লাগছে আমরা কী করতে চেয়েছি তা কেউ বুঝলেন না। দেখেন আমরা কিন্তু কখনো বলিনি যে, ধানমন্ডি মাঠ কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। আমি ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার পর কেউ যদি মাঠটি দেখে থাকেন তাহলে নিশ্চয় স্বীকার করবেন দেশের অন্যতম আভিজাত এলাকায় মাঠের কী অবস্থা ছিল। পরিবেশবাদী এখন আন্দোলনে নেমেছেন তখন যে ভয়াবহ অবস্থা ছিল তা তো মুখ খোলেননি। গরুরহাট ও বিভিন্ন মেলা বসাতে মাঠ এত করুন ছিল যে তা খেলার উপযোগী ছিল না। আর পরিবেশের কথা বললে সন্ধ্যার পর ৮ নম্বর সড়কে এলাকাবাসীর নিরাপত্তার কারণে চলাচল বন্ধ করে দিতেন। পরিবেশবাদীরা এলাকাবাসীর দোহাই দিচ্ছেন। অথচ রাত তো দূরের কথা দিনদুপুরেও যখন হাইজ্যাক করে হাইজ্যাকাররা মাঠ দিয়ে পালিয়ে যেতেন তখন তো তারা এগিয়ে আসেনি। এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে আমরা মাঠটিকে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এখন সিটি করপোরেশন নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছে তা তো মানতেই হবে। রবিবার কোর্টে শুনানি হবে। অথচ এর আগেই নোটিস ঝুলিয়ে দিল। যাক এ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই। ভালো কিছু করতে গেলে এত বাধা আসবে তা ভাবতেই পারিনি। এদিকে বৃহস্পতিবার সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। আন্দোলনের অন্যতম উদ্যোক্তা। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, মাঠ সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে। তবে খেলতে গিয়ে মাঠের সৌন্দর্যহানি না ঘটে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি বলেন, রবিবার শুনানি রয়েছে তাই আগাম কিছু বলতে চাই না। তবে মাঠ ব্যবহারের অনুমতি পেলেও লক্ষ্য আমাদের এখনো পূরণ হয়নি। আমাদের মাঠে যেসব অবকাঠামো নির্মাণ চলছে তা ভেঙে দিতে হবে। আর যে চারজনের বিরুদ্ধে ক্লাব মামলা করেছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। মোবাশ্বের বলেন, শুধু ধানমন্ডি নয় আমরা ঢাকা শহরে দখল করা সব মাঠ উদ্ধারের জন্য আন্দোলনে নেমেছি। শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।