১৯৩০ সাল থেকে বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হয়েছিল। এবার নিয়ে বিশ্বকাপের আসর হচ্ছে ২০টি। কিন্তু বছর হিসাব করলে ৮৪ বছরে পর্দাপণ করছে দুনিয়া কাঁপানো এ আসর। উরুগুয়ে থেকে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেখা যায় চ্যাম্পিয়নরা চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারেনি এমন রেকর্ড কমই রয়েছে। বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উরুগুয়ে, ইতালি, জার্মানি, ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স ও স্পেন। ২০তম আসরে এ আটটি দেশই চূড়ান্ত পর্বে খেলছে। গ্রুপ পর্বে কারা জিতে নক আউট পর্বে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে কোনো এক বিশ্ব বিজয়ীকে গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিতে হবে। যেমন এ গ্রুপে আছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, 'বি' গ্রুপে স্পেন, সি ও এইচ গ্রুপে কোনো চ্যাম্পিয়ন দল নেই। 'ই' গ্রুপে ফ্রান্স ও 'এফ' গ্রুপে রয়েছে দুইবারের বিশ্বজয়ী দল আর্জেন্টিনা। বড় কোনো অঘটন না ঘটলে এসব গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়নদের নক আউট পর্বে যাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
কথা হচ্ছে 'ডি' গ্রুপ থেকে কোন দুটি দল নক আউট পর্বে যাবে। শক্তির বিচারে না হয় ধরে নেওয়া যায় কোস্টারিকার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তিন দল নিয়েইতো ঝামেলা। 'ডি' গ্রুপকে ডেথ গ্রুপ বলা হচ্ছে। কারণ এখানেই তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে গেছে। চার বারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি, দুবারের উরুগুয়ে ও এক বারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। এখানে কোস্টারিকা যদি বাদও পড়ে বাস্তব কারণে এক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে বিদায় নিতে হবে। এখন কোন দুই চ্যাম্পিয়ন টিকবে। ১৯৫০ সালে দ্বিতীয় বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিশ্বকাপে উরুগুয়ের আর পাত্তাই মিলছিল না। চূড়ান্ত পর্বে খেলাটা তাদের কাছে রীতিমতো স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১০ বিশ্বকাপেই উরুগুয়ের দেখা মিলে উড়ন্ত রূপেই। সেমিফাইনাল পর্যন্ত চলে আসে তারা। ভাগ্য বিদ্রোহ না করলে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা পেত। সে থেকে বিশ্ব ফুটবলে নতুন রূপে দেশটির উত্থান ঘটেছে। সুতরাং গ্রুপে তাদেরকেই ফেবারিট ধরা হচ্ছে। অন্যদিকে আছে চার বারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও ৬৬ সালে বিশ্বকাপ জয়ী ইংল্যান্ড। ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে এবারে বিশ্বকাপে দুই দলের শক্তির তেমন পার্থক্য নেই। ১৪ জুন গ্রুপের প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ে খেলবে কোস্টারিকার বিপক্ষে। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইতালি। উরুগুয়ে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরুর সম্ভাবনা থাকলেও পরের ম্যাচে দুই চ্যাম্পিয়নের লড়াইয়ে জিতবে কে? বিশ্বকাপে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ড বা ইতালি এমন অগি্নপরীক্ষায় পড়েছে বলে মনে হয় না। ইতালির কোচ বলেছেন, তার টার্গেট ফাইনাল। অন্যদিকে ইংল্যান্ড ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী। আশা যাই হোক, মূলত দুই দলের প্রথম ম্যাচটি হবে বাঁচা-মরার লড়াই। যারা জিতবে তাদের যেমন বিশ্বকাপে টিকে থাকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে। তেমনি হারলে বিদায়ে শঙ্কা বেজে উঠবে। অনেকের মতে ১৩ জুলাই ফাইনালের একমাস আগেই আরেকটি ফাইনাল হয়ে যাবে।