'তখন শুধু ফিল্ডিং করতাম। কাকলী মাঠে টেনিস বলে খেলা চলছে। একটা ভালো ক্যাচ ধরলাম। স্থানীয় কোচ রশিদ ভাই তা দেখে আমাকে প্রাকটিসে আসতে বললেন। এরপর ক্রিকেট নিয়ে পথচলা শুরু হলো। একটা ক্যাচ আমার জীবনটা পাল্টে দিল।' নিজের জীবনে ক্রিকেটের আগমনের কথা এভাবে বললেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাওয়া রাজশাহীর ক্রিকেটার সাব্বির রহমান রুম্মন ।
নগরীর বালিয়াপুকুরে বাবা-মা আর এক ভাইয়ের সঙ্গে তার বসবাস। ছোটবেলাটা কেটেছে তার অভাব-অনটনে। বাবা মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন সিনেমা হলের টিকিট পরীক্ষক। বাবার সামান্য আয়ে সংসার চলত। তবে অভাব-অনটন কখনো পিছু ছাড়েনি। অভাবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলে গেছেন ক্রিকেট। ১৯৯৮ সালে দৈনিক বার্তা মাঠে স্থানীয় ক্লাবের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় তার অভিষেক। ২০০৩ সালে তিনি ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৩ দলের হয়ে হেলভেশিয়া কাপে অংশ নেন। তখন তিনি ব্রাদার্সের হয়ে খেলতেন। তখন এসএসসি পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষার হলে না গিয়ে তিনি সে সময় গিয়েছিলেন খেলার মাঠে। ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৩ দলের হয়ে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ১৫১ রানের ইনিংস খেলেন। এরপরই তিনি সবার নজরে আসেন। জাতীয় লিগে জেলা ও বিভাগীয় দলে খেলার সুযোগ পান ২০০৮ সালে। প্রিমিয়ার লিগে খেলেন কলাবাগানের হয়ে। প্রিমিয়ার লিগে ভালো করার সুবাদে রুম্মন জাতীয় দলে সুযোগ পান গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-২০, টি-২০ বিশ্বকাপ ও জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর ডাক পেয়েছেন দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার। ব্যাটিং অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান রুম্মন জানান, যেদিন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ঘোষণা করা হয়, সেদিন কলাবাগানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে মাঠে ছিলাম। মা হাজেরা খাতুন ফোন করে জানান বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়ার খবরটি। খবরটি শুনে আবেগে ভেসেছি কিছুক্ষণ। এরপর নিজেকে সামলে মনোযোগ দিয়েছি খেলায়। তিনি বলেন, 'বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়াটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমাকে যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাতে আমি গর্বিত। এখন পুরো দেশ তাকিয়ে আছে আমার পারফরমেন্স দেখার জন্য। কে বোলার আর কে ব্যাটসম্যান তা দেখে নয়, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে খেলতে চাই। বিশ্ব দরবারে দেশের লাল-সবুজ পতাকা তুলে ধরার যে দায়িত্ব কাঁধে এসেছে, তা সমুন্নত রাখতে নিজের সবটা বিলিয়ে দিতে চাই।'