২০১২ সালে যুব বিশ্বকাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। ওই আসরে দলের অধিনায়ক ছিলেন এনামুল হক বিজয়। খেলেছিলেন সৌম্য সরকারও। দুজনে দুই বছর পর ফের অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। এবার যাচ্ছেন জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে। প্রথমবার বিশ্বকাপ খেললেও দুজনেই চাইছেন যুব বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি, প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। সেই ম্যাচে এনামুলের খেলা প্রায় নিশ্চিত। বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করার সম্ভাবনাই বেশি যুব বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করা এনামুলের। সেবার দুটি সেঞ্চুরিসহ ৩৬৫ রান করেছিলেন। ওই আসরে সৌম্য খেললেও অস্ট্রেলিয়ান যুবাদের বিপক্ষে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। বর্তমান দলে সাকিবের রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা। এখন বিগ ব্যাশ টুর্নামেন্টে খেলছেন মেলবোর্ন রেনেগেটসের পক্ষে। কাল ৪ ওভারে ১৩ রানের খরচে উইকেট নিয়েছেন ৪টি। এছাড়াও তাসকিনেরও রয়েছে খেলার অভিজ্ঞতা। এনামুল ও সৌম্যের সঙ্গে যুব বিশ্বকাপে খেলেছিলেন তাসকিনও। যুব বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা নিজেকে বাড়তি সুবিধা দিবে বলে মনে করেন এনামুল, 'যুব বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা অবশ্যই কাজে দিবে। এছাড়া সাকিব ভাই বিগ ব্যাশ খেলছেন। দলের বেশ কয়েকজনের ২০১২ সালে যুব বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। এটা অবশ্য আমাদের জন্য ভালো দিক। আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হচ্ছে।' যুব বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচে সৌম্য রান করেছিলেন মাত্র ১০৭। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ছিল ৭৩ রানের আলোকিত একটি ইনিংস। দুই বছর আগের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলেন সিমিং অলরাউন্ডার কাম ওপেনার সৌম্য, 'অবশ্য সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। তবে সেটা ছিল যুব বিশ্বকাপ। এটা মূল আসর। তারপরও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে উইকেট ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করব।'
গত বছরটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশের। টানা ওয়ানডে হেরেছে টাইগাররা। অবশ্য বছরটা শেষ করেছে জিম্বাবুয়েকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে। সেই জয়ে এখন অনেক বেশি আত্দবিশ্বাসী টাইগাররা। মেজাজও ফুরফুরে। ২০১৫ সাল টাইগাররা শুরু করছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট দিয়ে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে অনুশীলনে নেমে পড়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের উইকেট ও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে ২৪ জানুয়ারি ব্রিসবেন যাবেন ক্রিকেটাররা। তার আগে যে প্রস্তুতি চলছে, সেটা নিয়ে সন্তুষ্ট এনামুল, 'প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার সিক্সে উইকেটগুলো ভালো ছিল। সে হিসেবে আমি মনে করি আমাদের প্রস্তুতিটা ভালো হয়েছে। সুপার সিক্সে ৫টি ম্যাচ খুবই সহায়তা করছে আমাদের। এছাড়া ব্রিসবেনে আমরা ১৪ দিনের একটি ক্যাম্প করব। এখন আমরা ভালো উইকেটে ক্যাম্প করছি। আমি মনে করি বিশ্বকাপে প্রস্তুতি আমাদের খারাপ হবে না।'
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের উইকেটগুলোতে বাউন্স ও গতি বেশি। সেখানে মানিয়ে নিতে ব্যাটসম্যানদের কঠিন লড়াই করতে হয়। ভালোই জানেন কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে। তাই দলকে ব্যাটিং অনুশীলন করাচ্ছেন মার্বেল পাথরে। এতে বল দ্রুতগতিতে আসে ব্যাটে। সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চাইছেন এনামুল, সৌম্যরা। এই ধরনের অনুশীলন দলকে সহায়তা করবে মনে করেন এনামুল, 'মার্বেল পাথরে বল একুট কুইক আসে। উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই এমনটা করা হচ্ছে। উইকেটে বাউন্স ও স্কিট করলেও এই ধরনের অনুশীলন কাজে দিবে।' যুব বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০১ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এনামুল। তাই তার ওপর আশাও একুট বেশি টিম ম্যানেজমেন্টের। মূল বিশ্বকাপে নিজের টার্গেট নিয়ে বলেন,' একজন ব্যাটসম্যান, বোলারের সব সময় টার্গেট থাকে ভালো খেলার। জিম্বাবুয়ে সিরিজ আমাদের ভালো গেছে। আমি চাইছি বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরতে।' সৌম্য নিজের টার্গেট সম্পর্কে বলেন, 'আমি চাইছি সুযোগ পেলে ভালো খেলার।'
বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৫ সদস্যের ৯জনই নতুন। ৯জনই প্রথমবার খেলতে যাচ্ছেন। এদের অন্যতম এনামুল ও সৌম্য। দুজনে চাইছেন ২০১২ সালের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখতে।