এমন উদ্দাম নৃত্য কে কবে দেখেছে! এমন উৎসব কোথায় হয়েছে!! এমন আবেগে কে কবে ভেসেছে!!! গতকাল ভোরে কোপা আমেরিকার ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে গোল শূন্য ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর চিলি অবিস্মরণীয় এক উদযাপনই করলো। শত বছর ধরে যে মুহূর্তের অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে চিলিয়ানরা তা যখন সত্যি হলো পরিবেশটা এমনই হওয়া উচিত ছিল। ঠিক যেমনটা তৈরি করলেন আলেঙ্সি সানচেজরা। টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনা পর পর দুইটা মিস করার পর চার নম্বরে শুট নিতে আসেন সানচেজ। বল জালে জড়াবার আগেই জার্সি খুলে উৎসবে মেতে উঠেন তিনি। সঙ্গে সানচেজের সতীর্থরা। গ্যালারির প্রায় ৫০ হাজার লাল জার্সিধারী এবং পুরো চিলিও সানচেজদের উৎসবে শামিল হলো মুহূর্তেই। শত বছর ধরে পুষে রাখা উচ্ছ্বাস যেন একসঙ্গেই বেরিয়ে এলো চিলিয়ানদের হৃদয় চিরে! এমন উৎসব বিশ্বকাপ জিতেও খুব কমই করা হয়।
কোপা আমেরিকা জিতে লিওনেল মেসিরা ভুলতে চেয়েছিলেন বিশ্বকাপ পরাজয়ের বেদনা। তবে এখান থেকেও সেই ব্যর্থতার গুরুভার কাঁধে নিয়েই বাড়ি ফিরতে হলো আলবেসিলেস্তদের। লিওনেল মেসি আন্তর্জাতিক ফুটবলে শিরোপাহীনই রয়ে গেলেন। কোপা আমেরিকা ফাইনালে তার সেই ম্যাজিক্যাল ফুটবল দেখা গেল না। সতীর্থরাও ছিল নিষ্প্রভ। চিলিয়ানরা নিজেদের মাঠের পুরো সুবিধাই নিয়েছে। দর্শকদের সমর্থনপুষ্ট হয়ে খেলেছে নির্ভার থেকে। তাদের শরীরী ভাষাটাই ছিল আক্রমণাত্দক। বিপরীত দিকে আর্জেন্টিনা ছিল কিছুটা কোণঠাসা। যেনো চিলির কাছে পরাজিত হওয়ার জন্যই মাঠে নেমেছিল আর্জেন্টাইনরা! এতকিছুর পরও অবশ্য কোপার ফাইনালে আর্জেন্টিনার চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে চিলি। ডিফেন্স লাইন কখনোই ফাঁকা হতে দেয়নি তারা। আর্জেন্টিনার বিশ্বসেরা আক্রমণ ভাগকেও পুরো নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল। বল দখলের লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার চেয়ে ৫৭-৪৩ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল চিলি।
এমন অসাধারণ এক জয়ের পর চিলিয়ানরা আবেগে রুদ্ধকণ্ঠ নিয়ে কেবল এতটুকুই বললো, অবশেষে সত্যি হলো স্বপ্ন!