এই প্রথম নয়। এর আগেও এমন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেসব আবার বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবারও সামলে নিবে বিশ্বাস ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের। কিন্তু ওয়েইন পারনেলকে জঙ্গী বলে টেলিফোনে যেভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাতে ভীষণ ব্রিবত ক্রিকেট বোর্ড। ঘটনাটি যাতে জটিল না হয় এবং সিরিজের উপর কোনো প্রভাব না ফেলে, সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাহায্য নিচ্ছে বিসিবি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও তৎপর বিষয়টির সমাধানে। আশার কথা হচ্ছে, এমন উদ্ভূত পরিস্থিতির পরও দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল জানিয়েছে, তারা ভীত নয়। বাংলাদেশের আতিথেয়তায় তারা মুগ্ধ। প্রথম টি-২০ ম্যাচ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটাররা যখন মাঠে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই পারনেলের রুমে ল্যান্ড ফোনে কল আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি বলেন, 'তোমরা মুসলমানের লেবাসে জঙ্গী কার্যক্রম চালাতে বাংলাদেশে এসেছ। লবিতে নেমে আস তোমাকে আমরা দেখে নিব।' পারলেনের কাছে যখন ফোন আসে, তখন ঘড়ির কাটায় সময় ১০টা ৪০। ফোন পেয়ে বিব্রত পারনেল দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে নিজেদের টিম মানেজমন্টেকে জানান। এরপর প্রোটিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি বিসিবির নিরাপত্তা কমিটিকে জানায়। বিসিবির কর্মকর্তারা সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করার জন্য। ফোনের হুমকিতে ভীত না হয়ে প্রথম টি-২০ খেলেন এবং ২.৫ ওভারে ১২ রানের খরচে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমানের। কালও খেলেন পারনেল। উইকেটও নেন। পারনেল ২০১১ সালে মুসলমান হন। এখন নিয়মিত ধর্মীয় কাজগুলো করেন। বাংলাদেশে এসেও রোজা রাখছেন নিয়মিত।
ফোনে হুমকির ঘটনাটি দেখছে গোয়েন্দা সংস্থগুলো। হয়তো সহসাই আসামিও গ্রেফতার হবেন। বিষয়টি নিয়ে এখন আর ভাবছে না সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। হুমকির ঘটনায় পারনেল ভীত নন জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান টিম ম্যানেজার মোহাম্মদ মুসাজি, 'হোটেলে আমাদের রুমে কীভাবে ফোন আসল, সেটাই ভাবছি। পারনেল ফোন পাওয়ার পরপরই আমাদের জানান। এরপর আমরা বিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। তবে হুমকি নিয়ে ভীত নন পারনেল।' দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা পারনেল ভীত নন, কাল ম্যাচই তার প্রমাণ। শুরু থেকেই আক্রমণাত্দক ক্রিকেট খেলে জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। ফোনে হুমকির বিষয়ে বিসিবির নিরাপত্তা কনসালটেন্ট মেজর (অব.) হোসেন ইমাম বলেন, 'আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, তাতে দেখা গেছে পারনেলের কাছে ফোন আসে ১০টা ৪০ মিনিটে একটি ল্যান্ড ফোন থেকে। তখন সে দলের সঙ্গে মিরপুর স্টেডিয়ামে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঘটনাটি শোনার পর আমরা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো চেষ্টা করছে ফোনের ঠিকানা বের করতে। আশা করছি দ্রুত আমরা জেনে যাব ঘটনাটি।' ২০১১ সালের বিশ্বকাপ চলাকালীন এমন এক ঘটনার জন্ম হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গাড়িতে একটি ঢিল পড়েছিল অজ্ঞাত স্থান থেকে। ক্রিস গেইল ঢিলের পরপরই টুইট করেন। সেটা জেনে যায় বিশ্ববাসী।