চলতি বছরের শুরুতে সফরকারী হিসেবে ভারতের মাটিতে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অংশ নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ওই সফরে ব্যাঙ্গালুরুতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের একটি আউট নিয়ে জল ঘোলা হয়। তাই পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ার দলের বিপক্ষে অভিযোগ তুলেন ভারতের দলপতি বিরাট কোহলি।
তিনি বলেন, ‘অনৈতিকভাবে ডিআরএস সুবিধা নিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া।’ ওই কথার পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন অসি দলপতি স্মিথ, ‘কোহলি যে ধরনের অভিযোগ করেছে, তা মোটেও সঠিক নয়।’
পুনেতে সিরিজের প্রথম টেস্ট ৩৩৩ রানের বড় ব্যবধানে জিতে অস্ট্রেলিয়া। ফেভারিট না হয়েও, দুর্দান্তভাবেই সিরিজ শুরু করেছিলো অসিরা। এরপর ব্যাঙ্গালুরুতেও ভারতের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে অসিরা। তাই ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ১৮৮ রানের টার্গেট পায় অস্ট্রেলিয়া। সেই টার্গেট ছুটতে গিয়ে ১১২ রানের বেশি যেতে পারেনি সফরকারী। ফলে ৭৫ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনে ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ভারতের পেসার উমেশ যাদবের বলে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন স্মিথ। অনফিল্ড আম্পায়ার আউটও দেন। এরপর অন্য প্রান্তে থাকা পিটার হ্যান্ডসকম্বের সাথে কথা বলে ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে ইঙ্গিত দেন স্মিথ। এতে বুঝা যাচ্ছিলো- ডিআরএস নেয়ার জন্য ড্রেসিংরুমের সহায়তা চাইছেন তিনি। যা ক্রিকেটের আইনের মধ্যে পড়ে না। এমনটা দেখে আম্পায়ারের দিকে তেড়ে যান কোহলি। এতে আম্পায়ার এগিয়ে এসে স্মিথকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান।
পরবর্তীতে ম্যাচ শেষে কোহলি বলেন, ‘আগেও অনেকবার ডিআরএস নিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। নিয়মের বাইরে ডিআরএস নিয়ে সুবিধা নিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া।’
কোহলির ওমন বক্তব্যে নিজের বই ‘দ্য জার্নি’তে স্মিথ বলেন, ‘কোহলির এমন দাবি মিথ্যা। আমরা ডিআরএসের জন্য কখনো ড্রেসিংরুমের সহায়তা নেইনি। এছাড়া কোহলি দাবিও করেছে, সে আম্পায়ারদের কাছে অভিযোগ করেছে। কিন্তু আম্পায়ার কিংবা ম্যাচ রেফারিরা এ নিয়ে কখনো আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি।’
স্মিথ আরও বলেন, নিজের ইচ্ছাতেই এমন কথা বলেন কোহলি। যাতে এই ব্যাপারটি নিয়ে আরও জলঘোলা হয় এবং কথার যুদ্ধ আরও বেড়ে যায়। যাতে নিজের সেরাটা বের করে আনতে পারেন কোহলি। চাপে পড়লেই নিজের সেরাটা দেখাতে পটু কোহলি বলে মনে করেন স্মিথ, ‘কোহলি চাপ পছন্দ করে। সে যুদ্ধ ভালোবাসে, সে লড়াই করতে ভালোবাসে। আমার মনে হয় যুদ্ধের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সে নিজের ভালোটা বের করে আনতে চাইছিল। এটি সে ইচ্ছা করেই করেছিলো।’
ওই সিরিজের পর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দেখা হয়েছিলো কোহলি ও স্মিথের। ওই সময় স্মিথের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই করেছে কোহলি। ওমন আচরণ স্মিথের কাছে আজও রহস্যজনক বলে মনে করেন, ‘আইপিএলের সময় তার সাথে কয়েকবারই দেখা হয়েছে। সে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছে। এটা আমার কাছে এখনো বড় রহস্য।’
বিডি প্রতিদিন/২৭ অক্টোবর ২০১৭/এনায়েত করিম