অস্ট্রেলিয়ার আদালতে ভিসা জটিলতা কাটল নোভাক জোকোভিচের। বিচারালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে, দেশটির ভিসা পেতে সমস্যা নেই সার্বিয়ান তারকার। হোটেল কোয়ারেন্টাইন থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হবে তাকে। খেলার বাধা কাটল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও।
ভ্যাক্সিন জটিলতায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কর্তৃপক্ষের খেলতে না দেয়া, তথ্যের ঘাটতিতে দেশটিতে ঢুকে বিমানবন্দরে আটকে পড়া, জোরপূর্বক হোটেল কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো, অজি ও সার্বিয়ান সরকারের বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য, অভিযোগ-আপত্তির ভিড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন জোকোভিচ। ভিসা বাতিল করে তাকে বিশেষ হোটেলে একরকম রুমবন্দিই রাখা হয়েছিল চার রাত।
দেশ ত্যাগে বিলম্ব করায় মেলবোর্ন বিমানবন্দরেও আট ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছিল জোকোকে। পরে নেয়া হয় একটি আশ্রয়কেন্দ্রে। এরপর ভিসা বাতিলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামেন তিনি। বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার আদালতে আপিল করেন। ভ্যাকসিন নিয়ম-ছাড়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে আবেদন জানান।
ভার্চুয়াল শুনানির শেষে সোমবার এলো সিদ্ধান্ত। মেলবোর্ন বিমানবন্দরের কর্মীদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান হয়েছে আদালতে। জোকোভিচের ভিসা বাতিল করার যে সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলীয় সরকার নিয়েছিল, সেটিকেও ‘অযৌক্তিক’ বলেছেন বিচারালয়। জানিয়েছেন ভিসা পেতে বাধা নেই জোকোভিচের।
অবশ্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের আইনজীবীরা বলছেন অন্য কথা। জানিয়েছেন, দেশটির ইমিগ্রেশন মন্ত্রী অ্যালেক্স হকার চাইলে ‘নিজস্ব ক্ষমতাবলে’ এখনও জোকোভিচের ভিসা বাতিল করতে পারবেন।
৩৪ বছর বয়সী ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া ওপেনে খেলতে দেশটিতে আসেন। তখন বিমানবন্দরে তার বিরুদ্ধে নন-ভ্যাক্সিনেটেডের অভিযোগ আনা হয়।
অজি ভিসা আইনে, দেশটিতে প্রবেশ করতে হলে প্রত্যেক বিদেশি নাগরিকের করোনার দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকতে হবে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলার নিয়মেও জোকারের ভ্যাক্সিনেটেড থাকা বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু বিশেষ ছাড়ের আবেদন করে খেলার পথ খোঁজেন জোকো।
জোকোভিচকে ছাড়ও দেয় অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়। তারপর থেকেই সেখানে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে পরে জোকোভিচ-প্রসঙ্গ। প্রশ্ন ওঠে, টেনিস অস্ট্রেলিয়া তাকে টুর্নামেন্টে খেলার অনুমতি দেয় কীভাবে।
বিপরীত অবস্থান নেয় অজি সরকারও। গত সপ্তাহে জোকোর ভিসা বাতিল ইস্যুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান কড়া অবস্থানের কথা। বলেছিলেন, ‘জোকোভিচ কোনো বিশেষ কেউ নন। প্রত্যেকের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য।’
এদিকে সার্বিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অপরাধীর মতো আচরণ করা হচ্ছে টেনিসের শীর্ষ তারকার সাথে। জোকোকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা নিয়ে খোদ অস্ট্রেলিয়াতেই হয়েছে বিক্ষোভ। সারাবিশ্ব থেকেই এসেছে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের খবর।
শেষে আদালত রায় দিলেন জোকোভিচের পক্ষেই। ভিসা পাওয়ায় ঘোষণার পর অবশ্য আপত্তি জানানো থামছে না। তীব্র আপত্তি আসছে অজি মন্ত্রীদের থেকেও। অন্যদিকে সার্বিয়ানরা দাবি জানিয়ে চলেছে, ভ্যাকসিন জটিলতা বলে কিছু নেই, জোকোভিচকে না খেলতে দিতেই এই অপরাজনীতির পথ বেছে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন কর্তৃপক্ষ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত