ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন ড্যান ক্লিভার। দারুণ ইনিংস খেলে দলকে এনে দিলেন বড় পুঁজি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার বল হাতে নিয়ে মাত্র পাঁচ বল করেই হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতলেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। সবমিলিয়ে আয়ারল্যান্ডকে আবারও অনায়াসে হারাল নিউজিল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড সফরে ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও নিউজিল্যান্ড জিতে নিল এক ম্যাচ বাকি থাকতে।
বেলফাস্টে বুধবার (২০ জুলাই) দ্বিতীয় ম্যাচে কিউইদের জয় ৮৮ রানে। টি-টোয়েন্টিতে রানের দিক দিয়ে তাদের তৃতীয় বড় জয় এটি। ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান করে নিউজিল্যান্ড। আইরিশরা গুটিয়ে যায় ৯১ রানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে ৫৫ বলে ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে ম্যাচের সেরা ক্লিভার। ৫ চার ও ৪ ছক্কায় গড়া তার ইনিংসটি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হওয়া ব্রেসওয়েল এদিন ৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। লেগ স্পিনার ইশ সোধিও নেন ৩ উইকেট।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ফিন অ্যালেনের ব্যাটে ঝড়ো সূচনা পায় নিউজিল্যান্ড। পঞ্চম ওভারে ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের বিদায়েই ভাঙে ৪৪ রানের শুরুর জুটি। ২০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ রান করে ক্যাচ দেন তিনি। আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল ছিলেন তার উদ্বোধনী সঙ্গীর ঠিক উল্টো। ১১ রান করতে তিনি খেলেন ১৭ বল। নেই কোনো বাউন্ডারি। প্রথম ম্যাচে ৫ রান করা ক্লিভার এরপর প্রায় একাই এগিয়ে নেন দলকে। ৪০ রানে একবার তাকে স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন লর্কান টাকার। আর কোনো সুযোগ দেননি ক্লিভার।
৩০ বছর বয়সী এই কিপার-ব্যাটসম্যান ৩৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন ব্যারি ম্যাককার্থিকে ছক্কায় উড়িয়ে। আরেকটি ছক্কা হাঁকান উইল ইয়াংকে। শেষের আগের ওভারে জশ লিটলকে মারেন তিনটি চার। প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ৬৯ রান করা গ্লেন ফিলিপস এবার ১৬ বলে করেন ২৩ রান। ড্যারিল মিচেল করেন ১০ বলে ১৪।
রান তাড়ায় শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ৫৪ রানেই ৭ উইকেট হারানো দলটি অলআউট হয় ৩৭ বল বাকি থাকতে। স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন মার্ক অ্যাডায়ার। পল স্টার্লিংয়ের ব্যাট থেকে আসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান। ব্রেসওয়েল চতুর্দশ ওভারে বল হাতে নিয়ে প্রথম বলে হজম করেন চার। দ্বিতীয় বলে আসে সিঙ্গেল। পরের তিন বলে মার্ক অ্যাডায়ার, ম্যাককার্থি ও ইয়াংকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। ক্যাচ তুলে দেন তিনজনই।
নিউ জিল্যান্ডের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করলেন ব্রেসওয়েল। ২০০৯ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জ্যাকব ওরাম, পরের বছর অকল্যান্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে টিম সাউদি এই স্বাদ পেয়েছিলেন।
ব্রেসওয়েল মূলত ব্যাটসম্যান। সঙ্গে করেন অফ স্পিন। ৩১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের আয়ারল্যান্ড সফরটা দারুণ কাটছে। প্রথম ওয়ানডেতে শেষ ওভারে ২০ রানের কঠিন সমীকরণ মেলানোর পথে তিনি খেলেন অপরাজিত ১২৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। পরের দুই ম্যাচেও অপরাজিত থাকেন ৪২ ও ২১ রানের ইনিংস খেলে। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ব্যাটিংয়ে ২১ রানের পর এবার বল হাতে তিনি দেখালেন চমক। একই মাঠে আগামী শুক্রবার হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৭৯/৪ (গাপটিল ১১, অ্যালেন ৩৫, ক্লিভার ৭৮*, ফিলিপস ২৩, মিচেল ১৪, নিশাম ১*; ইয়াং ৪-০-৩৪-২, অ্যাডায়ার ৪-০-৩৮-০, লিটল ৪-০-৩১-২, ম্যাককার্থি ৪-০-৪৮-০, ডকরেল ৩-০-২০-০, ক্যাম্পার ১-০-৮-০)
আয়ারল্যান্ড: ১৩.৫ ওভারে ৯১ (স্টার্লিং ২১, বালবার্নি ১০, ডেলানি ০, টেক্টর ২, ক্যাম্পার ১৪, টাকার ২, ডকরেল ০, অ্যাডায়ার ২৭, ম্যাককার্থি ১১, ইয়াং ০, লিটল ০*; স্যান্টনার ৪-০-২৫-২, ডাফি ৩-০-২০-২, ফার্গুসন ২-০-১০-১, সোধি ৩-০-২১-৩, নিশাম ১-০-১০-০, ব্রেসওয়েল ০.৫-০-৫-৩)
ফল: নিউজিল্যান্ড ৮৮ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে দ্বিতীয়টি শেষে ২-০ তে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড
ম্যান অব দা ম্যাচ: ড্যান ক্লিভার।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ