বুধবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
OXFAM -এর চোখে

পৃথিবীর অর্ধেক সম্পদ যে ধনীদের হাতে

সাইফ ইমন

পৃথিবীর অর্ধেক সম্পদ যে ধনীদের হাতে
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দাতা সংস্থা অক্সফাম সম্প্রতি একটি অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারা বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যা ৭৬০ কোটি ধরে তার অর্ধেক ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদের পরিমাণের ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরেন, মাত্র ২৬ জন মানুষের হাতে রয়েছে বিশ্বের অর্ধেক সম্পদ! ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য পৌঁছে গেছে বিপজ্জনক মাত্রায়। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বজুড়ে আর কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। এই ২৬ জনের মধ্য থেকে কয়েকজন ধনকুবেরের আয়ের পরিমাণ ও অর্থসাম্রাজ্যের নানা কাহিনী নিয়ে আজকের রকমারি-

 

তাদের হাতে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার

অক্সফামের প্রতিবেদন বলছে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য পৌঁছে গেছে বিপজ্জনক মাত্রায়। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বজুড়ে আর কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। সম্পদ-বিরোধী সংস্থা অক্সফাম তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই সতর্কতা জারি করেছে। বিশ্বের শীর্ষ ২৬ ধনীর সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের অর্ধেক মানুষ অর্থাৎ ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদের সমান। অতি ধনীর সঙ্গে পৃথিবীর অর্ধেক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বৈষম্য এখন পূর্ব ধারণার চেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০১০ সালে দরিদ্রতর অর্ধেক জনগোষ্ঠীর সমান সম্পদ ছিল ৩৮৮ জন ধনীর হাতে। সম্পদের এই ‘অসাম্য ঘোচাতে’ বিশ্ব নেতাদের দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম।  বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলেছে, ক্রেডিট সুসির তথ্যানুযায়ী ১ শতাংশ লোকের হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছে বিশ্বের বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের সমান সম্পদ। আর এই পরিস্থিতির জন্য কর নীতিমালা ও লবি গ্রুপগুলোকে দায়ী করেছে অক্সফাম।

আন্তর্জাতিক আর্থিক সেবা সংস্থা ক্রেডিট সুসি বলছে, বিশ্ব জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ মানুষের মাথাপিছু সম্পদ ১০ হাজার ডলারের কম। ১০০ কোটি লোকের সম্পদের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ডলারের মধ্যে।

বাকিদের মধ্যে ৮ শতাংশের প্রত্যেকের সম্পদের অর্থমূল্য ১ লাখ ডলারের বেশি। এদের মধ্যে ৩৪ মিলিয়নই যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। আর বর্তমান বিশ্বের ২৬ জন ধনী ব্যক্তির যে সম্পদ আছে তা ৩৮০ কোটি মানুষের মোট সম্পদের সমান। ওই ২৬ জন ধনীর সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার। বিশ্বের কোটিপতিদের সম্পত্তি প্রতিদিন আড়াই বিলিয়ন বৃদ্ধি পায়। অক্সফাম আরও বলছে, অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যতা রক্ষা করতে হলে এসব ধনী ব্যক্তির ওপর বেশি করে করারোপ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী ধনী ও দরিদ্রের এই বৈষম্য দূর করতে সরকারের পাশাপাশি ধনকুবেরদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে 

আসন্ন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনের আগে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করল সংস্থাটি। প্রতি বছরের জানুয়ারিতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা দাভোসের এ সম্মেলনে অংশ নেন। ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। অক্সফামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ধনীদের সম্পদ যে স্থির অবস্থায় আছে- এমন নয়।

তাদের সম্পদ গত বছর প্রতিদিন ২৫০ কোটি ডলার করে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে ফোর্বসের তালিকায় থাকা শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোসের প্রসঙ্গ টানা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, জেফ বেজোসের সম্পদ গত বছর ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বেড়েছে। তার সম্পদের মাত্র ১ শতাংশ ১০ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ ইথিওপিয়ার পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান। ধনীর ধন বাড়লেও দরিদ্রের সম্পদ কমেছে। ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদ গত বছর ১১ শতাংশ কমেছে।

ধনী ও গরিবের মধ্যে সম্পদের এই বিশাল ব্যবধানের কারণে দারিদ্র্যের মোকাবিলা করা অসাধ্য হয়ে পড়েছে। আর যা অর্থনীতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে। অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘গোটা বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ এ নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ও হতাশ।’ সরকার স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতো খাতগুলোতে অর্থায়ন করছে না কিন্তু ঠিকই বিত্তবানদের অনেক ক্ষেত্রে কর মওকুফ করে দিচ্ছে।

 

তারা শীর্ষ ধনী

শীর্ষ ২৬ জন ধনীর তালিকার শীর্ষে রয়েছেন জেফ বেজোস, বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেট, বার্নার্ড আর্নল্ট, মার্ক জুকারবার্গ, আমানসিও ওর্তেগা, কার্লোস স্লিম হেলু, চার্লস কোচ, ডেভিড কোচ, ল্যারি এলিসন, মাইকেল ব্লুমবার্গ, ল্যারি পেইজ, সারহে ব্রিন, জিম ওয়াল্টন, এস রবসন ওয়াল্টন, এলাইস ওয়াল্টন, মা হুয়াটেং, ফ্রানকুয়েস বেটেনকোর্ট, মুকেশ আম্বানি, জ্যাক মা, শেল্ডন অ্যাডেলসন, স্টিভ বাল্মার, লি-কা সিং, হুই কা ইয়ান, লি শাও কি, ওয়াং জিয়ানলিন।

 

 

 

 

বিল গেটস [ যুক্তরাষ্ট্র ]

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। বিশ্বসেরা ধনীদের তালিকায় তিনি বরাবরই শীর্ষে নাম লেখান। তার মোট সম্পদ ৬৯.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কম্পিউটিং জগতের চেহারাটাই বদলে দিয়েছেন তিনি। বিল গেটস উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জনক। ১৯৫৫ সালে তিনি ওয়াশিংটনের এক উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জম্ম গ্রহণ করেন। তাকে নিয়ে বলা হয়, কোনো একটি বিষয় তার মাথায় ঢুকলে সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনো কাজে মনোনিবেশ করতেন না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। তার আয়ের প্রধান উৎস মাইক্রোসফট। সফটওয়্যার তৈরি ও বাজারজাতকরণের বড় বাজারও তার দখলে। ডেক্সটপ কম্পিউটারের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম তিনি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিয়ে অর্থসাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিন সন্তানের জনক এই প্রযুক্তিবিদ সামাজিক কাজেও অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছেন। তার প্রতিষ্ঠিত বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে কাজ করে যাচ্ছেন মানবকল্যাণে।

 

আমানসিও ওর্তেগা [ স্পেন ]

এখন বয়স ৮০ বছর। থাকেন স্পেনের লা করুনায়। স্পেনের ব্যবসায়ী ইন্ডিটেক্স ফ্যাশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আমানসিও ওর্তেগা। তার মোট সম্পদ ৫৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফ্যাশন হাউসকে ঘিরে যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন সবাই আমানসিও ওর্তেগাকে গুরু মানেন। কারণ রীতিমতো ফ্যাশন বিপ্লব ঘটিয়েছেন এই স্প্যানিশ ধনকুবের। ২০১১ সালে তিনি বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন হাউস ইন্ডিট্যাক্সের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ ছাড়া তিনি স্পেনের জারা ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার। বর্তমানে ফ্যাশনের গণ্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন সেক্টরে পা দিচ্ছেন তিনি। তার মালিকানায় রয়েছে এপিক হোটেল, একটি ৫৪ তলার বিলাসবহুল ভবনসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। ওর্তেগার বাবা ছিলেন রেল কর্মচারী। তাই এক শহরে বেশিদিন থাকা হতো না। ১৯৭২ সালে ওর্তেগা প্রথম ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। চালু করেন একটি ফ্যাশন হাউস। যেখানে শুধু বিভিন্ন ধরনের শার্ট বিক্রি হতো। যা পরবর্তী সময়ে ‘জারা’ ব্র্যান্ড নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। এখান থেকেই গড়েন টাকার পাহাড়।

 

ওয়ারেন বাফেট [ যুক্তরাষ্ট্র ]

যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের ওয়ারেন বাফেট। বর্তমানে তার হাতে থাকা সম্পদের পরিমাণ ৬৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যবসা জগতে ‘ওমাহার বিচক্ষণজন’ বলে পরিচিত ওয়ারেন বাফেট। তাকে বিংশ শতকের সবচেয়ে সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি মাল্টি-বিলিয়ন ডলার কনগ্লোমারেট ‘বার্কশায়ার হ্যাথাও’-এর মালিক এবং চেয়ারম্যান। তিনি তার সম্পদের ৯৯ ভাগ জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য দান করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। তিনি জীবনে প্রথম শেয়ার কিনেছিলেন মাত্র ১১ বছর বয়সে। ছোটবেলায় তিনি প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে পেপার বিলি করতেন। তা থেকে যা সঞ্চয় হতো, মাত্র ১৪ বছর বয়সে তা দিয়ে তিনি একটি ছোট্ট খামার কিনেছিলেন। বর্তমানে ৮৬ বছর বয়স্ক বাফেট একজন অত্যন্ত উৎসাহী কন্ট্রাক্ট ব্রিজ খেলোয়াড়। বিল গেটসের সঙ্গে তিনি প্রায়ই ব্রিজ খেলেন। বিপুল ধনসম্পদের মালিক হওয়া সত্ত্বেও ওয়ারেন বাফেট অত্যন্ত মিতব্যয়ী। ১৯৫৮ সালে বাফেট যে বাড়িটি কিনেছিলেন, এখনো তিনি ওমাহার সেই বাড়িতেই বাস করেন।

 

কার্লোস স্লিম হেলু [ মেক্সিকো ]

মেক্সিকান ব্যবসায়ী কার্লোস স্লিম হেলু। তার মোট সম্পদ ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৪০ সালে মেক্সিকোতে জম্ম  নেওয়া এই টেলিকম ব্যবসায়ী হোটেল ব্যবসা ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা দিয়ে তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করেন। মূলত ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়টা ছিল তার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ সময়ে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন ফ্রান্স টেলিকম এবং সাউথ ওয়েস্টার্ন বেল করপোরেশনের সঙ্গে। এখান থেকেই সফলতার সিঁড়ির দেখা পান। এরপর বেসরকারি টেলিফোন সংস্থার দিকে হাত বাড়ান তিনি। ধীরে ধীরে তার ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ে গোটা লাতিন আমেরিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ব্যক্তি জীবনে ছয় সন্তানের জনক কার্লোস ছোটবড় দু-একটা ঘটনা ছাড়া খুব একটা সমালোচিত হননি। টেলিকম ব্যবসা দিয়ে তার উত্থান ঘটলেও এখনো ধরে রেখেছেন সেসব ব্যবসা। এখনো মেক্সিকোতে রয়েছে তার হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও বেশ কয়েকটি হাউজিং কোম্পানি। ৭৬ বছর বয়সেও দক্ষ হাতে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন, আরও উঁচু করছেন টাকার পাহাড়।

 

জেফ বেজোস [ যুক্তরাষ্ট্র ]

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৬.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অ্যামাজন ও জেফ বেজোস একে অন্যের পরিপূরক নাম। ইন্টারনেটেও যে বেচাকেনা হতে পারে এই ধ্যান-ধারণা সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠা পায় অ্যামাজনের মাধ্যমে। আর অ্যামাজন গড়ে ওঠে জেফ বেজোসের হাতে। এই সফল প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের অন্যতম উদ্যোক্তাদের একজন। অ্যামাজনে কর্মরত আছেন এমন কর্মীর সংখ্যা ৫৬ হাজারেরও বেশি। সফটওয়্যার ডেভেলপিং নিয়ে আগ্রহ থেকেই অ্যামাজনের যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৯৪ সালে ই-কমার্স সাইট অ্যামাজনের যাত্রা শুরু করেন। এরপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে প্রতিষ্ঠানটির ওপর। কিন্তু ধৈর্য ধরে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন তিনি। দীর্ঘ সময় সাহসী উদ্যোক্তার মতোই প্রতিষ্ঠানটিকে টেনে নিয়ে যান জেফ। একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরির চেয়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রতিষ্ঠান তৈরির ব্যাপারেই মনোযোগী ছিলেন এই উদ্যোক্তা। বিশ্বকে সেটাই করে দেখিয়েছেন তিনি।

 

মার্ক জুকারবার্গ [ যুক্তরাষ্ট্র ]

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা, প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার তৈরি ফেসবুক গোটা দুনিয়াকে একসুতোয় বেঁধেছে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, উদ্যোক্তা ও তরুণ ব্যবসায়ীদের তালিকাতেও রয়েছেন মার্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধুদের মুখের ছবি এঁকে অ্যালবাম তৈরির পর মার্কের মাথায় এসেছিল একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইট তৈরির চিন্তা। সেই স্বপ্নের জগৎটাই ফেসবুক। এখন তিনি একই সঙ্গে কম্পিউটার প্রোগ্রামার এবং ইন্টারনেট উদ্যোক্তা। শিক্ষার্থীথাকাকালীন শখের বশে সফটওয়্যার লেখা শুরু করেন। ২০০২ সালে পিল্লিপ্স এক্সেটার একাডেমি থেকে পাস করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ২০০৪ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হল থেকে ফেসবুকের সূচনা করেন জুকারবার্গ। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সাল থেকে মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুক নিয়ে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে প্রযুক্তি বিষয়ে একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন তিনি। আর এ সূত্র ধরেই টাকার স্রোতে ভাসছেন মার্ক।

 

ল্যারি এলিসন [ যুক্তরাষ্ট্র ]

মার্কিন ব্যবসায়ী ল্যারি এলিসন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ল্যারি এলিসন ওরাকল করপোরেশনের অন্যতম সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। ১৯৪৪ সালের ১৭ আগস্ট জম্ম গ্রহণ করা ল্যারি তার শিক্ষাজীবনে ছিলেন অত্যন্ত অমনোযোগী। বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত সফলভাবে তিনি শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেননি। এর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোতে পড়ার সময়ে তিনি প্রথম পরিচিত হন কম্পিউটার ডিজাইনের সঙ্গে। ১৯৬৪ সালে তিনি স্থায়ীভাবে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়াতে চলে আসেন। সত্তরের দশকে তিনি এমডাল করপোরেশনে কাজ শুরু করেন। এখানে তার একটি কাজ ছিল সিআইএর জন্য ডাটাবেজ তৈরি করা। এই কাজ করতে গিয়ে তিনি উৎসাহী হয়ে ওঠেন ডাটাবেজ নিয়ে কাজ করতে। ১৯৭৭ সালে তিনি গড়ে তোলেন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরিজ। পরে ১৯৭৯ সালে এরই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ওরাকল।

 

মাইকেল ব্লুমবার্গ [ যুক্তরাষ্ট্র ]

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক মাইকেল ব্লুমবার্গ। ৩৮.৮ বিলিয়ন সম্পদের মালিক তিনি, অর্থাৎ ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার তার। এই ডেমোক্র্যাটিক রাজনৈতিক সর্বশেষ মার্কিন নির্বাচনে বেশ সক্রিয় ছিলেন। প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে শেষ পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেননি। ৭৪ বছর বয়সী এই ধনকুবেরের অর্থ সাম্রাজ্যের পেছনে রয়েছে ব্লুমবার্গ এলপি নামের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ব্লমবার্গ এলপি। সফটওয়্যার ও তথ্য ভাণ্ডারের ব্যবসায় তিনি অসামান্য সাফল্যের দেখা পান। বর্তমানে এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে ১৯ হাজার মানুষ কাজ করছে। তবে ২০১৪ সালের পর থেকেই বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে। অবশ্য সেটি ভালোভাবেই সামলেছেন তিনি। যার প্রমাণ মেলে তার ব্যক্তিগত আয়ের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ দেখে। ১৯৬৬ সালে ওয়ালস্ট্রিটে শেয়ার ব্যবসার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিলেন ব্লুমবার্গ। শুধু ধনকুবের হিসেবেই নন, ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবেও তিনি ফোর্বসের তালিকার প্রথম সারিতে রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর