দেশজুড়ে চলছে কারফিউ। দিনের বেলা কারফিউ শিথিল থাকলেও নগরজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে সতর্কাবস্থায়। আর রাতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের চলে টহল এবং কড়া নজরদারি। এ অবস্থায়ও সিলেটে বেপরোয়া চোরাচালান সিন্ডিকেট। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চিনি চোরাচালান অব্যাহত রয়েছে। সঙ্গে আসছে মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য।
সিলেট জেলার তিন দিক দিয়ে ভারত সীমান্ত। দীর্ঘদিন ধরে এসব সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারিরা ভারত থেকে চিনি, কসমেটিকস, সিগারেট, মোবাইল ফোন সেট, মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসছে। প্রায় এক বছর ধরে চিনি চোরাচালান ‘ওপেন সিক্রেট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোটি কোটি টাকার চিনির চালান আটক হলেও থেমে নেই চোরাচালান সিন্ডিকেট। কোটা আন্দোলন ঘিরে চলমান অস্থিতিশীল অবস্থায়ও চোরাকারবারিরা বেপরোয়া। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য সীমান্ত দিয়ে নিয়ে আসছে সিলেট শহরে। পরে নানান কৌশলে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।
কারফিউর মধ্যে ভারতীয় চিনির সর্বশেষ চালান আটক হয় জকিগঞ্জ উপজেলার শাহগলি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মঙ্গলবার রাতে। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের ওই স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ চিনিবোঝাই তিনটি ট্রাক আটক করে। ওই তিনটি ট্রাকে করে ১ হাজার ৫৪ বস্তা ভারতীয় চিনি নিয়ে যাচ্ছিল চোরাকারবারিরা। জব্দ ৫২ হাজার ৭০০ কেজি চিনির বাজার মূল্য প্রায় সোয়া ৬৩ লাখ টাকা। এ চিনি পরিবহনের দায়ে তিনজনকে আটক করা হয়।
এর আগে ২৩ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত পাঁচ দিনে জেলা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫৮৪ বস্তা চিনি জব্দ করে। এর বাজার মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। অভিযানকালে আটক করা হয় ১২ জনকে। সিলেটের গোলাপগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ চালানগুলো আটক করে পুলিশ। এদিকে কারফিউ চলাকালে চিনি ছাড়াও সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় মদের বেশ কয়েকটি চালান আটক করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ট্রাকে করে মাটিচাপা দিয়ে পাচারের সময় সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ইসলামপুর থেকে ৮২০ বোতল ভারতীয় মদ আটক করা হয়। এ ছাড়া গেল কয়েক দিনে পুলিশ বেশ কয়েকটি মাদকের চালান আটক করেছে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, চোরাচালান রোধে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। যখনই খবর পাচ্ছে অভিযান চালাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতেও চোরাচালান সিন্ডিকেটের ওপর নজরদারি রাখছে।