দিনের বেলায় সড়কের অর্ধেক জুড়েই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকত ময়লা-আবর্জনা। দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো পথচারীদের। খুলনা নগরীর ১৫৯টি স্থানে এভাবে নাগরিক ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। তবে গত দুই দিন ধরে নগরীর কেডিএ এভিনিউসহ কয়েকটি স্থানে দেখা মিলছে ভিন্ন চিত্র। সকাল ১০টার মধ্যেই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে ময়লা-আবর্জনা ট্রাকে করে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। এরপর দুর্গন্ধ দূর করতে ওই স্থানে ছিটানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার।
একইভাবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সড়কে নিয়ম মেনে চলছে যানবাহন। পিকচারপ্যালেস, লোয়ার যশোর রোড, থানার মোড়, ডাকবাংলো মোড়ে উল্টোপথে যানবাহন প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। সড়কে নির্দিষ্ট লেনে রিকশাভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার চলতে বাধ্য করা হচ্ছে। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজিতে জড়িতরা গা ঢাকা দিয়েছে। ফলে ডাকবাংলো বেবি স্ট্যান্ড, রূপসা ঘাট সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে।
জানা যায়, শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর ৬ আগস্ট থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক নগর ভবনে যাচ্ছেন না। তার অনুপস্থিতিতেই কেসিসির রাজস্ব ও লাইসেন্স শাখার ছয় কর্মকর্তাকে পদায়ন করে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বদলি করা হয়েছে আরও কয়েকজনকে।
কেসিসি প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান জানান, সড়কে ময়লা অপসারণের পর সেখানে ব্লিচিং পাউডার দেওয়ার নির্দেশনা আগেও ছিল। কিন্তু কঞ্জারভেন্সি শাখা স্টোরে মালামাল থাকলেও তা সরবরাহ করা হয়নি। দায়িত্বে থাকা সহকারী কঞ্জারভেন্সি অফিসার নূরুন্নাহার এ্যানির বিরুদ্ধে মশক নিধনের ওষুধ পাচারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকায় ১০ আগস্ট স্টোরে তালা ভেঙে সেখানে নতুন তালা লাগানো হয়েছে। দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন।
জানা যায়, কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৫৮২ জন স্থায়ী ও আউটসোর্সিংয়ে ২০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী ঝাড়ু দেওয়া, ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, ড্রেন পরিষ্কারসহ পরিচ্ছন্নতা কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীনে নিয়োগ হওয়া প্রায় ৪০০ জন অফিসে ক্লারিক্যাল কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ করেন না। এতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জনবল সংকট রয়েছে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান জানান, সড়কে যান চলাচলের ক্ষেত্রে কিছুটা শৃঙ্খলা চোখে পড়েছে। এটা ধরে রাখতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা না থাকায় জনভোগান্তি বাড়তে থাকে। এ বিষয়ে মনিটরিংসহ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।