দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রের কাছে জিম্মি বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, দুদকে একদিকে চলে রাজনৈতিক প্রভাব, অন্যদিকে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব। এই দুই প্রভাবের কারণে সংস্থাটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। তাই দুদককে আপাদমস্তক ঢেলে সাজাতে হবে।
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
বৈঠকে কমিশনের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম, আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফারজানা শারমিন উপস্থিত ছিলেন। অনলাইনে যুক্ত হন কমিটির সদস্য ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক মোস্তাক খান। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের কমিশনার ও গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়নের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দুদকের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রেষণে আসে। এতে দুদকের অন্য কর্মীরা কাজ করতে পারেন না। প্রথম সভায় তাঁরা কমিশনের দায়িত্ব, এখতিয়ার, কর্মপরিধি বোঝার চেষ্টা করেছেন বলে জানান ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, দুদকের যে এখতিয়ার, তার দুটি আঙ্গিক হচ্ছে প্রতিকার ও প্রতিরোধ। যাঁরা দুর্নীতি করেন, তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা ও বিচার করা।
দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে যে ধরনের সংস্কার প্রয়োজন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে দুদকের কাজে বাধা তৈরি করে, এমন আইন ও বিধিমালা পর্যালোচনা করা।
শুধু আইনি সংস্কার দিয়ে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, সেটি ভাবা ঠিক নয়। সার্বিকভাবে শাসনপদ্ধতির পাশাপাশি একধরনের মানসিকতা তৈরি হয়ে গেছে যে দুর্নীতি করে পার পাওয়া যায়। সেটা কীভাবে প্রতিহত করা যায়, সে জন্য সুপারিশমালা প্রণয়ন করবেন তাঁরা।