বরিশালে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না জেলেরা। অবাধে চলছে ইলিশ শিকার। সকাল ও সন্ধ্যায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় চলছে ইলিশের বেচাকেনা। মেঘনা, কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ, তেতুলিয়া ও কালাবদর নদীতে প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি ইলিশ শিকার হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সড়ক পথে পুলিশি কঠোর অভিযান না থাকায় অবাধে ইলিশ পাচার হচ্ছে নগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
সদর উপজেলার চরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. মুজাম্মেল বলেন, কীর্তনখোলা নদীর লামছড়ি এলাকায় অবাধে মাছ শিকার চলে। সকালে ফেলা জাল সন্ধ্যায় উঠিয়ে নদীর তীরে বিক্রি হয়। সন্ধ্যায় ফেলা জাল ভোর রাতে উঠিয়ে বেচা-বিক্রি করে।
তিনি জানান, জেলেদের শিকার করা মাছের বেশিরভাগই জাটকা সাইজের। তবে দুই একটি বড় সাইজের ইলিশ মাছও পাওয়া যাচ্ছে। জাটকা তিনশ থেকে চারশ ও বড় সাইজের ইলিশ মাছ এক হাজার দুইশ টাকা দরে বিক্রি হয়।
মেঘনা নদীর হিজলা উপজেলার বাসিন্দা মো. সেলিম জানান, মেঘনা নদীতে অবাধে মাছ শিকার করছে। নদীর তীরে ইলিশের হাট বসে। বড় সাইজের ইলিশ মাছের হালি চার থেকে পাঁচ হাজার, কেজি সাইজের ইলিশের হালি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ও জাটকা আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, হিজলা, মুলাদী, মেহেন্দিগঞ্জ, সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ থেকে শিকার করা ইলিশ চরবাড়ীয়া ইউনিয়নের তালতলি বাজারে নিয়ে আসে। সেখান থেকে কাভার্ডভ্যান, মিনিট্রাক, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে বরিশাল নগরীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কান্তি ঘোষ বলেন, নদী ও তীরে প্রতিদিন ৬টি টিম দায়িত্ব পালন করছে। আটক ও জরিমানা চলছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে স্পটে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিনি। অভিযান সফল করতে আন্তরিকতার কোন কমতি রাখছেন না। তার পরেও একই সময়ে সব স্পট নিয়ন্ত্রণ করা কিছুটা কঠিন।
ইলিশ অভিযানের সার্বিক বিষয়ে বরিশালের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, অভিযান সফল করতে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব, সেনাবাহিনী সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
তিনি জানান, প্রতিদিন আটক, মামলা, জব্দ করা সহ সার্বিক কার্যক্রম চলছে। এর পরেও কোন ধরণের অনিয়ম, পাচারের নির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসকের কঠোর নির্দশনা রয়েছে কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের।
বিডি প্রতিদিন/আশিক