পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যাও অর্ধশতাধিক। সেনাবাহিনীর ওপর গুলিবর্ষণের ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা। আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলিবর্ষণে তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছে। উত্তেজনার উদ্ভব খাগড়াছড়ি থেকে পরে তা রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা নিরসনে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে বুধবার মামুন নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করে উপজাতীয়রা। আহত মামুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে বাঙালিরা প্রতিবাদ মিছিল করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পাহাড়িদের বাড়িঘর-দোকানপাটে আগুন লাগায় দুর্বৃত্তরা। ঘরবাড়ি ছেড়ে গহিন পাহাড়ের দিকে পালায় পাহাড়িরা। খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালায় বুধবার পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সদরসহ পুরো জেলায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের নারানখখাইয়া, স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি পরিদর্শন করেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ। পাহাড়ে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। মূলত আইন হাতে তুলে নেওয়ার কারণেই হানাহানির সূত্রপাত। আমরা আশা করব উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সফর উভয় সম্প্রদায়ের ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে ভূমিকা রাখবে। পাহাড়ি-বাঙালি সবার স্বার্থেই শান্তি ফিরিয়ে আনতে হবে পার্বত্যাঞ্চলে।