রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জেএসসি পরীক্ষা : বিষয়ভিত্তিক মূল্যবান পরামর্শ

পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তোমাদের পরীক্ষা। এতে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেতে হলে করণীয় কী এ ব্যাপারে তোমাদের জন্য বিষয়ভিত্তিক মূল্যবান পরামর্শ দিচ্ছেন ঢাকার উত্তরাস্থ ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষক।

জেএসসি পরীক্ষা : বিষয়ভিত্তিক মূল্যবান পরামর্শ

ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র

 ভালো করতে অনুশীলনের বিকল্প নেই

পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা রইল। আশা করি পরীক্ষা সামনে রেখে তোমরা ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রে ভালোভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করছ। তবে সীমিত সময়ের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে কতিপয় দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দিচ্ছি যা তোমাদের সহায়ক হবে।

লক্ষণীয় যে, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পূর্ণমান ৫০। এটি দু’টি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে Grammar Part-এর জন্য ৩০ নম্বর এবং দ্বিতীয় অংশে Writing Part-এ ২০ নম্বর।

 

Part-A অংশে ভালো করতে হলে নিচের কৌশলগুলো অনুসরণ করতে পার :

১নং প্রশ্ন     : Article এর ক্ষেত্রে A, an, the এর ব্যবহারসহ Article বসে না এরূপ Sentence এর নিয়মাবলি আয়ত্তে রাখবে।

২নং প্রশ্ন     : Simple preposition এর ব্যবহারবিধিসহ Appropriate Preposition অর্থ জেনে মুখস্থ করবে।

৩নং প্রশ্ন     : Substitution Table হতে অর্থপূর্ণ বাক্য গঠনের জন্যে Tense, Subject + Verb + Object + Extra এবং fveMZ Passive Voice সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা অর্জন কর।

৪নং প্রশ্ন     :    Narration এর ক্ষেত্রে Tense, Person পরিবর্তন ও Sentence সম্পর্কে সম্যক ধারণা  নেবে।

৫নং প্রশ্ন     :    Changing sentence এর ক্ষেত্রে Conversion of Sentence এবং Transformation of Sentence এর পার্থক্যসহ Negative, Interrogative, Exclamatory, Degree ও Voice সম্পর্কে সম্যক জানবে।

৬নং প্রশ্ন     :    Capitalization & Punctuation এর ক্ষেত্রে যথাস্থানে যতিচিহ্ন ও বড় হাতের অক্ষরের ব্যবহার করাসহ ওঃবসটির নিয়মাবলী জানবে।

৭নং প্রশ্ন     :    Pre-fix & Suffix এর ক্ষেত্রে বারবার অনুশীলন করে শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করবে।

৮নং প্রশ্ন     : Right Form of verbs এর ক্ষেত্রে যথাযথভাবে Tense, Sequence of Tense, Strong & Weak Verb, Be verb, Voice I Preposition সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখবে।

Part-B

এ অংশ সম্পূর্ণ Writing নির্ভর। Written Part-এর সবগুলো Item মুখস্থ করে লেখা সম্ভব নয়। তাই Free handwriting এর অভ্যাস থাকা ভালো। ই-মেইল, আবেদনপত্র লেখার ক্ষেত্রে নিজের নাম, ঠিকানা ব্যবহার করবে না। Composition  লেখার জন্য শব্দসীমা দেওয়া থাকে। তবে নির্ধারিত শব্দের চেয়ে ১০/১৫টি শব্দ বেশি লিখলে কোনো নম্বর কাটা যায় না। উত্তরদান হতে হবে সঠিক বাক্য গঠনের মাধ্যমে নির্ভুল বানান এবং সুন্দর উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে। পরীক্ষা শুরুর বাকি দিনগুলোয় কঠোর পড়াশোনা করে যাও। সেইসঙ্গে যা পড়েছ তার নিয়মিত রিভিশন দাও। আশা করি এর মধ্য দিয়েই তোমরা পরীক্ষায় নিশ্চিত প্রত্যাশিত সাফল্য পাবে।

 

 

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

বহুনির্বাচনীর ক্ষেত্রে মূল পাঠ্যবই  পড়বে

মো. আব্দুল কাদের প্রভাষক, ইংরেজি

‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়টি অন্যান্য বিষয়ের  চেয়ে একটু ভিন্ন। কেননা এর মধ্যে পাঁচটি ভিন্ন বিষয়ের (পৌরনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, সামাজিক বিজ্ঞান) সংমিশ্রণ রয়েছে। কাজেই বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে।

ইতিহাস ও পৌরনীতি অংশের অধ্যায়গুলো পড়ার সময় স্থান, দিন, তারিখ, সাল এবং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নাম উল্লেখপূর্বক পড়বে।

যেসব অধ্যায়ে চিত্র রয়েছে বিশেষ করে ৭ ও ১৩ নম্বর অধ্যায়গুলো বেশি করে পড়বে এবং খাতায় বার বার লিখবে।

অধ্যায় ১১ পড়ার সময় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের জীবন, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক তুলনা ভালোভাবে পড়বে।

অর্থনীতি অংশের অধ্যায় পড়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট বিষয় যথা—GDP, GNP, PCI, Remittance এগুলো ভালোভাবে পড়বে।

বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তরের ক্ষেত্রে মূল পাঠ্যবই পড়বে। মনে রাখবে মূল পাঠ্যবইয়ের অনুরূপ খাতা মূল্যায়ন করা হয়।

বহুনির্বাচনী প্রশ্নোত্তরগুলো এক কথায় সঠিক উত্তরের মতো পড়বে। তাতে উত্তর কম ভুল হবে।

সৃজনশীল প্রশ্নের ক্ষেত্রে মূল বিষয়ের সঙ্গে সামাঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষকদের পাঠদানকৃত প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো গল্পের মতো মনে রাখবে। তাতে প্রশ্ন বুঝতে সহজ হবে।

পরীক্ষায় ভালো করার জন্য সৃজনশীল প্রশ্নের ক্ষেত্রে প্রশ্ন বাছাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর লেখার ক্ষেত্রে বাক্য গঠন ও উপস্থাপন কৌশল সুন্দর হওয়া প্রয়োজন। অপ্রাসঙ্গিক বিষয় পরিহার করতে হবে।

মনে রাখবে সৃজনশীল প্রশ্নে দক্ষতার স্তর অনুযায়ী মানবণ্টন করা হয়। যেমন—জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতর দক্ষতা। সুতরাং এ নিয়মেই উত্তর লিখবে। তোমাদের সফলতা কামনা করছি।

 

 

গণিত

 বীজগণিতের সূত্রগুলো বার বার লিখবে

আকলিমা আক্তার চম্পা

প্রভাষক, পৌরনীতি

গণিতে ভালো নম্বর পেতে হলে নিচের বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখবে —

অধ্যায়-২ এবং অধ্যায়-৩ থেকে সাধারণত দুটি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকে। অধ্যায় দুটিতে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্কের সংখ্যাও কম। টেস্ট পেপার থেকে বার বার এসেছে এমন ৭-৮টি প্রশ্ন সমাধান করলেই খুব সহজে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে।

অধ্যায়-৪ : বীজগণিতের সূত্রগুলো বার বার লিখবে। এ অধ্যায় থেকে একটি সৃজনশীল থাকে। বইয়ের ২/৩টি অঙ্ক মিলে সৃজনশীল প্রশ্ন হয় বলে প্রতিটি অঙ্ক বার বার করতে হবে। প্রশ্নে যে তথ্যগুলো দেওয়া থাকে সেগুলো এবং প্রশ্নের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সূত্র লিখলেও কিছু নম্বর পাবে। জ্যামিতির অঙ্কনের সময় পরিমাপ ঠিক রেখে অবশ্যই খাতার বামে আঁকতে হবে এবং অঙ্কনের বিবরণ পরবর্তী পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করতে হবে।

পরিমাপ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে অবশ্যই একক লিখতে হবে। সেট (Set) থেকে সৃজনশীল আসলে এটি প্রথমেই উত্তর করা ভালো কারণ এটি তুলনামূলকভাবে অনেক সহজ এবং কম সময় লাগে।

যে অঙ্কগুলো সহজ মনে হবে সেগুলো প্রথমে উত্তর করাই ভালো। তবে যে কোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে অন্য সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখবে না প্রয়োজনে পর্যাপ্ত জায়গা রাখবে পরবর্তীতে লেখার জন্য।

পরিসংখ্যান বিভাগের প্রশ্নের উত্তরে গ্রাফ থাকলে তা সর্বশেষে উত্তর করাই ভালো।

সব প্রশ্নের উত্তর নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার জন্য সময় বণ্টন জরুরি। রিভিশন দেওয়ার জন্য কমপক্ষে ১০ মিনিট রাখতে হবে।

পরীক্ষার হলে সাধারণ ক্যালকুলেটর এবং জ্যামিতি বক্স অবশ্যই নিবে।

ভীতি পরিহার, আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় মনোবল থাকলে ভালো ফলাফল আসবে। তোমাদের জন্য শুভ কামনা।

 

কৃষিশিক্ষা

প্রতিটি অধ্যায়ের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পড়বে

বিএম আজমল হোসেন

প্রভাষক, গণিত

ছাত্রজীবনের দ্বিতীয় পাবলিক পরীক্ষা জেএসসি।   সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পরীক্ষার জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। এখন পড়া বিষয়গুলো রিভিশন দাও। ‘কৃষি শিক্ষা’ বিষয়টি একটু গুরুত্ব দিয়ে পড়বে কারণ এ বিষয়ে বেশিরভাগ প্রশ্নই আসে বইয়ের ভিতর থেকে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিতে প্রয়োগকৃত সারের পরিমাণগুলো বারবার রিভিশন দিতে হবে। এছাড়াও কৃষিজ উৎপাদন অধ্যায়ের মাছ চাষ, রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার ও শস্যজাতীয় ফসলের উৎপাদন কৌশলগুলো বারবার রিভিশন দেবে। এছাড়াও কৃষিশিক্ষা বিষয়ে বহুনির্বাচনীতে ছোট ছোট অঙ্ক থাকে। সেদিকে একটু লক্ষ রাখতে হবে। বহুনির্বাচনীতে অঙ্কগুলোর সঠিক উত্তর দিতে হলে তোমাদের অবশ্যই সারের পরিমাণ, বীজের পরিমাণ, হেক্টরপ্রতি এদের উৎপাদন প্রভৃতি বিষয়গুলো ভালো করে পড়তে হবে। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য অবশ্যই বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মূল পাঠ্যবইটির প্রত্যেকটি পাঠ ভালো করে বুঝে পড়তে হবে। এছাড়া প্রত্যেকটা অধ্যায়ের বিস্তারিত বর্ণনা ও খুঁটিনাটি বিষয়গুলো পড়বে। প্রতিটি অধ্যায়ের বিষয়ভিত্তিক সম্যক জ্ঞান থাকলে এ বিষয়ে তোমাদের কোনো সমস্যায় পড়বে না তোমরা। সুতরাং পরীক্ষা সামনে রেখে এখন বারবার রিভিশন দাও। সময়ের সঠিক ব্যবহার কর। তোমার অবশ্যই সফল হবে।

ফারজানা রহমান মনি

প্রভাষক, কৃষিশিক্ষা

সর্বশেষ খবর