আবার যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে। যেকোনো মুহূর্তে পুরো মাত্রার যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নাবাতিয়ে অঞ্চলে হামলায় এক নারী ও তার দুই শিশু সন্তান্ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও পাঁচজন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে ইসরায়েলি বাহিনী বলছে, হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর অস্ত্রাগারে আঘাত হানা হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, নাবাতিয়ে অঞ্চল রাতভর লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অস্ত্রাগারে হামলা চালিয়েছে বিমান বাহিনী। এর আগে, ইসরায়েলি বাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানায়, তাদের যুদ্ধবিমান মারৌন এবং আইতা আল-শাব গ্রামে সামরিক ভবনে হামলা চালিয়েছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও হিজবুল্লাহর শীর্ষ দুই নেতা হামলায় নিহত হন। এসব হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হামাস, ইরান ও হিজবুল্লাহ। সেইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দেয়। এমন উত্তেজনার মধ্যেও লেবাননে হামলা চালাল ইসরায়েল।
এদিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে গত এপ্রিলে হামলার পর ইসরায়েলে শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। এ হামলার মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে ইরান তার সক্ষমতার জানান দেয়। গত সপ্তাহে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজধানী তেহেরানে গিয়ে এক গুপ্ত হামলার শিকার হয়ে নিহত হন হামাস প্রধান ইসমাঈল হানিয়া। ইরানের মাটিতে হামাস প্রধান নিহতের ঘটনায় তেহেরান সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করে হামলা হুমকি দিয়েছে।
ইসরায়েলে ইরানের হামলা বন্ধে তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। ইরানকে এ হামলা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এবার ইসরায়েলে হামলা চালানোর ব্যাপারে ইরানকে হুঁশিয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক মার্কিন কর্মকর্তা শুক্রবার বলেছেন, ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে হামলা চালালে বিপর্যয়কর পরিণতির মুখোমুখি হবে ইরান। একইসঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা লাইনচ্যুত হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েলে হামলা পরিণতি বেশ বিপর্যয়কর হতে পারে, বিশেষ করে ইরানের জন্য। তিনি আরো বলেন, ইরানের মিত্র হামাসই ৭ অক্টোবর এই যুদ্ধ শুরু করেছিল। ইরান যদি আমাদের কাছে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে আসে খুব ভালো। এসব না করে যদি হামলার পথ বেছে নেয় সেটা হবে পরিহাস।
হামাসকে ছাড়াই গাজা যুদ্ধ বন্ধে কাতারে দুদিনের আলোচনা হয়েছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল।