বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

টেনেটুনে যারা মেট্রিক পাস দেশের প্রতি তাদের মায়া নেই : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেনেটুনে যারা মেট্রিক পাস দেশের প্রতি তাদের মায়া নেই : প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে গতকাল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নীতি ও আদর্শের চর্চা করে নিজেকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যারা ছাত্রলীগ করে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী তাদের দেশপ্রেমিক হতে হবে। দেশ-জাতির প্রতি যে কর্তব্য, সেই কর্তব্যবোধ ও অনুভূতি থাকতে হবে। অন্যদিকে একজন ছাত্রের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো লেখাপড়া। কাজেই সর্বোপরি সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। কী পেলাম, আর কী পেলাম না সে হিসেব না করে দেশকে কী দিতে পারলাম, দেশের মানুষের জন্য কী করতে পারলাম সে হিসাব করতে হবে। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ছাত্রলীগ নেতারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। অষ্টমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে আসেন ছাত্রলীগের নেতারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি তোমাদের হাতে খাতা ও কলম তুলে দিয়েছি। তোমাদের লেখাপড়া শিখতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। অশিক্ষিত কেউ ক্ষমতায় এলে কী করতে পারে, সেটা মনে হয় তোমাদের আর বুঝিয়ে বলতে হবে না। এ সময় তিনি বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, কেউ মেট্রিক ফেল, কেউ টেনেটুনে মেট্রিক পাস। যাদের জ্ঞান নেই, তারা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে এটাই স্বাভাবিক। এদেশের প্রতি তাদের কোনো মায়া নেই। তারা তো কেউ এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেন নাই। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্ম পাকিস্তানের করাচিতে। সেখানে তার বাবা-মায়েরও কবর রয়েছে। জেনারেল এরশাদের জন্ম কুচবিহারে, আর খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুড়িতে। এদেশের মানুষের প্রতি তাদের ভালোবাসা থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধু এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন, তার কন্যা হিসেবে আমিও এদেশের মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছি। এদেশের প্রতি, মানুষের প্রতি আমাদের মমত্ববোধ রয়েছে। দেশের স্বার্থ আমরা কখনো জলাঞ্জলি দেব না। ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম ও দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ সব সময় একটা আদর্শ নিয়ে চলবে। তোমরা আদর্শ নিয়ে গড়ে উঠলে আদর্শবান নেতা পাওয়া যাবে। আমরা চাই না কেউ মাদকাসক্ত হোক, জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ুক।

রোগীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন : সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস)-এর ১৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রোগীদের প্রতি আচরণ বদলানোর জন্য চিকিৎসকদের তাগিদ দেন। তিনি বলেন, রোগ সারাতে ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকদের কথা। এ জন্য সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের সেবা করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করবেন—এটাই আমরা চাই। বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স (বিসিপিএস) সভাপতি অধ্যাপক মো. সানাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কলেজের সাবেক সভাপতি এস এ এম গোলাম কিবরিয়া। প্রধানমন্ত্রী সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এফসিপিএস এবং এমসিপিএস ডিগ্রি অর্জনকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে সনদ এবং কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বর্ণপদক বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক মো. সানওয়ার হোসেন এদিন সমাবর্তনে সনদ লাভকারী শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান।

সর্বশেষ খবর