হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় জীবিত ব্যক্তিকে কাগজে কলমে মৃত বানিয়ে বয়স্ক ভাতায় নয়-ছয় করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে জীবিত থাকার পরও মৃত অবস্থায় রয়েছে ৭৩ বছর বয়সী আবুল মহসিন নামে ওই বৃদ্ধ। যে কারণে গত এক বছর যাবত বয়স্ক ভাতাসহ নাগরিক কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না তিনি। আবুল মহসিন উপজেলার ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব ইউনিয়নের কামালখানী গ্রামের বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ২০২৪ সালের ২৯ মে ১ নম্বর উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান অফিসিয়াল প্যাডে আবুল মহসিনকে মৃত উল্লেখ করে একটি সনদ ইস্যু করেন (স্মারক: ২০২৪-১৭০)। এরপর একই বছরের ১৪ জুলাই চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য শহীদ মিয়ার যৌথ স্বাক্ষরে সমাজসেবা কার্যালয়ে বয়স্কভাতা হালনাগাদের তালিকা জমা দেওয়া হয়। ওই তালিকায় মহসিনের স্থলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মনু মিয়া নামের আরেক ব্যক্তিকে। ভাতা তোলার বিকাশ নম্বরটিও বদলে দেয়া হয়। ফলে বয়স্ক ভাতার দরজা বন্ধ হয়ে যায় আবুল মহসিনের।
নিজের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে গত এক বছর ধরে উপজেলা কার্যালয় থেকে জেলা কার্যালয় পর্যন্ত ঘুরেছেন তিনি। কিন্ত কোথাও মেলেনি প্রতিকার। শেষ পর্যন্ত তিনি জানতে পারেন তার নাম মৃতদের তালিকায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে একটি সিন্ডিকেট এই ঘটনার সাথে জড়িত। তারা কৌশলে আবুল মহসিনের নামে ভুয়া মৃত্যু সনদ জারি করে তার স্থলে ভাতাভোগীর তালিকায় অন্য আরেকজনের নাম প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে। আর এ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে সিন্ডিকেটটি।
এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রধান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্বাক্ষরিত তালিকা ও সনদের ভিত্তিতেই আমরা হালনাগাদ করেছি। চেয়ারম্যান ও সদস্যের স্বাক্ষর থাকা তালিকা যাচাই করেই নেওয়া হয়। মূলত ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে বানিয়াচং ১নম্বর উত্তর-পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল