প্রসূতির অস্ত্রোপচার একটি কঠিন-জটিল চিকিৎসা। অনেকটা স্পর্শকাতর। এ চিকিৎসায় চিকিৎসক যত বেশি পারদর্শী, অভিজ্ঞ ও দক্ষ হবেন, রোগীও তত বেশি উন্নত ও নিরাপদ সেবা পাবেন। কিন্তু গাইনি এবং পেটের অস্ত্রোপচার চিকিৎসায় একাডেমিক শিক্ষাই চিকিৎসকদের ভরসা। এর বাইরে বিশেষায়িত কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না।
তবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গাইনি বিভাগে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছে ‘প্রফেসর এম. এ তাহের খান গাইনি এনডোস্কপি স্কিল ল্যাব’। ‘বিল্ডিং কমপিটেন্সি অ্যান্ড প্রফেসনাল স্কিল’ শীর্ষক স্লোগানে গত ১৬ জুলাই ল্যাবটি চালু করা হয়। চমেক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ওপরে সপ্তম তলায় সুপরিসরের একটি কক্ষে স্কিল ল্যাবটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, কনসালটেন্ট এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পর্যায়ের মোট ৮০ জন চিকিৎসক এ ল্যাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। চমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহেনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে এটি চালু হয়।
ল্যাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গাইনি চিকিৎসকেরা ল্যাপারোস্কপি ও হিস্টেরোস্কপি অপারেশনে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন। ফলে গাইনি চিকিৎসকরা রোগীর পেট না কেটে কম্পিউটারের সাহায্যে অস্ত্রোপচার করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ ল্যাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারছেন গাইনি চিকিৎসকরা।
এনডোস্কপি সার্জারি গাইনি বিভাগে প্রথম শুরু হয় চমেক হাসপাতালের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রয়াত অধ্যাপক ডা. এম এ তাহের খানের নেতৃত্বে। তাই তাঁর এ অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে এনডোস্কপি স্কিল ল্যাবের নামকরণ করা হয় ‘প্রফেসর এম এ তাহের খান গাইনি এন্ডোস্কপি স্কিল ল্যাব’। চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী বলেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের এমবিবিএস পর্যায়ে গাইনি বিভাগ নিয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু গাইনি সার্জারি নিয়ে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো বিশেষ কোনো কোর্স নেই। সময়ের বিবর্তনে এটি এখন জরুরি। তাই হাসপাতালের গাইনি বিভাগে প্রসূতি রোগীর সার্জারি নিয়ে চিকিৎসকদের দক্ষ-অভিজ্ঞ করতে স্কিল ল্যাবটি চালু করা হল। চট্টগ্রামে এটি প্রথম। তিনি বলেন, তিন মাস মেয়াদি কোর্সে বর্তমানে মোট ৮০ জন চিকিৎসক এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। চমেক হাসপাতালের দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা এ প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। গাইনি চিকিৎসক যত বেশি দক্ষ-অভিজ্ঞ হবেন, রোগীরাও তত বেশি আধুনিক, উন্নত ও নিরাপদ সেবা পাবেন। স্কিল ল্যাবে চিকিৎসকদের আধুনিক পদ্ধতিতে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।