৪ জুলাই, ২০২২ ১৩:০৭
ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজের প্রতিবেদন

বিশ্বকে যেভাবে পাল্টে দিতে পারে মুদ্রাস্ফীতি

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বকে যেভাবে পাল্টে দিতে পারে মুদ্রাস্ফীতি

ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

আসুন, একটি গল্প জেনে নিই। বর্তমান ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানি। দেশটি এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম কর্তাও বটে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর নড়বড়ে হয়ে পড়ে জার্মানির অর্থনীতি। সেই বিশ্বযুদ্ধের পরপরই যুদ্ধের মিত্রশক্তি ও তৎসংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহ জার্মানির উপর চাপিয়ে দেয় ভার্সাই চুক্তি।

এই চুক্তির কারণে তাদেরকে দিতে হয় চরম খেসারত। জার্মানিকে পরিশোধ করতে হয় ১৩২ বিলিয়ন গোল্ড মার্ক সমমূল্যের ক্ষতিপূরণ। এই বিশাল অর্থের বোঝা জার্মানির অথনীতির চাকাকে রুদ্ধ করে, বেড়ে যায় মূল্যস্ফীতি। ভীষণ অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয় জার্মানিজুড়ে। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে দেশটি। হতাশায় নিমজ্জিত দেশটিতে তৈরি হয় সামাজিক অস্থিরতা।

পরপর দুটি সফল নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয় দেশটিতে। তাতেও স্থীতিশীলতা ফেরেনি। উন্নতি হয়নি পরিস্থিতির। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয় দেশটিতে। বেড়ে যায় বেকারত্বের হার। অনিশ্চিয়তায় ডুবে যায় জার্মানি। ঠিক এই সময়ে নাৎসি পার্টির অ্যাডলফ হিটলার এই সংকটকেই কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন।

১৯৩৩ সালের ৩০ জানুয়ারিতে নতুন নেতার উদ্ভব হয় জার্মানিতে। তিনিই হলেন হিটলার। ওই দিন তিনি দেশটির চ্যান্সেলরের দায়িত্ব নেন। এরপরের ঘটনা ইতিহাস। এই  গল্প বলার অর্থ হল- আর্থিক দুর্দশার কারণে মুদ্রাস্ফীতি ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে।

আসুন এবার নজর দেওয়া যাক বর্তমান বিশ্বের দিকে। বিশ্বজুড়ে পড়ে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। কমে যাচ্ছে মুদ্রার মান। বাড়ছে জ্বালানির দাম। লাগামহীন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যও।

এখন তাহলে জেনে নেওয়া দরকার আসলে মুদ্রাস্ফীতি বলতে কী বুঝায়? শুধু ক্রয়ক্ষমতা কিংবা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা থাকাই নয়, বিশ্ব ব্যবস্থায় মুদ্রাস্ফীতি বলতে আসলে কী বুঝায়, সেটাই এই গল্পের উপজীব্য।

বর্তমান বিশ্ব এখন পরিচালিত হচ্ছে গণতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদী শাসন ও সাংবিধানিক রাজতন্ত্র দ্বারা। এই প্রতিবেদনে আক্ষরিক অর্থে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি পরবর্তী অবস্থাকেই বোঝানো হচ্ছে।

গোটা বিশ্ব এখন নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বজুড়ে এখন চলে মুক্তবাণিজ্য। এখন যেভাবে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, এর সঙ্গে ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত বিশ্ব রাজনীতি (পলিটিক্স), নীতি (পলিসিস), অগ্রাধিকার (গ্লোবাল প্রায়োরিটিজ- তথা ভোক্তা ও খরচের গতির ভারসাম্য) এবং দারিদ্র। 

রাজনীতি

মূল্যস্ফীতি বা মুদ্রাস্ফীতিকে সাধারণত বলা হয় ‘মাদার অব পলিটিক্যাল চেঞ্জ’ অর্থাৎ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় মুদ্রাস্ফীতি।

আগেই জেনেছেন যুদ্ধ পরবর্তী জার্মানিতে কী ঘটেছিল? আবারও যুদ্ধে জড়িয়েছে ইউরোপ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরাশক্তি রাশিয়া। আর এই যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে মুদ্রাস্ফীতির কবলে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। এর ফলাফল পড়ছে ভোটের মাঠেও।

১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ক্ষমতায় ছিলেন, তখন জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে বেকারত্বের হার, মুদ্রাস্ফীতির কারণে পতন হয় তার। তিনি পরবর্তী নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারান।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা কী জানেন? দেশটিতে ইতোমধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ, জ্বালানির দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ। আসছে নভেম্বরে আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মধ্যবর্তী নির্বাচন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিগত ৪৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন মধ্যবর্তী নির্বাচনের মুখোমুখি হচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এই নির্বাচনে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পাল্টে দিতে পারে যেকোনও হিসাব-নিকাশ। ফল ভোগ করতে হতে পারে বাইডেন ও তার দল ডেমোক্র্যাটকেও। এমনকি এটি পাল্টে দিতে পারে মার্কিন রাজনীতির গতিপথও।

ভারতেও অতীতে রাজনৈতিক পট ও ক্ষমতার পালা বদলে ভূমিকা রেখেছিল এই মুদ্রাস্ফীতি। ২০১৪ সালে দেশটির জাতীয় নির্বাচনে মনমোহন সিং সরকারের পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল মুদ্রাস্ফীতি। তাহলে বুঝতেই পারছেন মুদ্রাস্ফীতি একটি দেশের সরকারের ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি ছাড়িয়ে গেছে ৭ শতাংশেরও ওপরে। খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে কমপক্ষে ৭ শতাংশ। চলতি বছর ও আগামী বছর বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- ব্রাজিল, ইসরায়েল, পাকিস্তান ও তুরস্কের মতো দেশও। নিত্যপণ্যের দাম এভাবে বাড়তেই থাকলে আগামী নির্বাচনে এসব দেশে ক্ষমতার পালাবদলের সম্ভাবনা প্রবল। কারণ, নিতপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি যেকোনও সরকারের পতন ঘটাতে পারে। এটা পরিবর্তন ঘটাতে পারে যেকোনও দেশের ভাগ্যের।

একবার ভেনেজুয়েলার দিকে দৃষ্টিপাত করুন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে দেশটিতে। কিন্তু বিশ্ব অর্থনৈতিক মানচিত্রে দেশটির অবস্থান কোথায়?

রাজনৈতিক সংকট ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেশটিকে ভয়ানক সমস্যায় নিক্ষেপ করে। ১৯৭৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ভেনেজুয়েলায় মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে ৩,৭২৯ শতাংশ।

শুধু তা-ই নয়, গত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভেনেজুয়েলায় মুদ্রাস্ফীতি পৌঁছে গিয়েছিল ৩,৪৪,৫০৯ শতাংশে। সেই সময় ‘জাঙ্ক’ হয়ে যায় দেশটির মুদ্রা, অর্থাৎ ঋণের অর্থ শোধ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না ভেনেজুয়েলার সরকারের কাছে। দেশটিতে টয়লেট পেপারের চেয়েও নগদ টাকার ব্যবহার সস্তা হয়ে পড়ে। আর তখন ৬০ লাখের বেশি নাগরিক দেশটি ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমান, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ। লাতিন আমেরিকার এক সময়ের সবচেয়ে ধনী দেশটি এখন অর্থনৈতিক সংকটের কারণে টিকে থাকার লড়াইয়ে ধুঁকছে।

নীতির পরিবর্তন

মুদ্রাস্ফীতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশের নীতিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বেশ কয়েকটি দেশ একই কারণে পণ্য রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

এসব দেশের মধ্যে- আর্জেন্টিনা আগামী ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সয়াবিন তেল ও সয়াবিন খাদ্যপণ্য রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আলজেরিয়া পাস্তা, গমজাত খাবার, ভোজ্যতেল ও চিনি রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

মিশর ২০২২ সালের ১২ জুন ভোজ্যতেল ও ভুট্টা এবং ২০২২ সালের ১০ জুন পর্যন্ত গম, আটা-ময়দা, বিভিন্ন ধরনের তেল, মসুর ডাল, পাস্তা ও শিম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ভারত ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। 

ইন্দোনেশিয়া পাম ওয়েল, ইরান আলু, বেগুন, টমেটো ও পিঁয়াজ, খাজাখস্তান গম ও আটা-ময়দা, কসোভো গম, ময়দা, ভোজ্যতেল, কর্ন, লবণ ও চিনি, তুরস্ক গরুর মাংস,ভেড়ার মাংস, খাসির মাংস, মাখন ও রান্নার তেল, ইউক্রেন গম, ওটস ও চিনি, রাশিয়া চিনি, সূর্যমুখীর বীজ, গম, ভুট্টা, বার্লি, রাই শস্য ও মেসলিন, তিউনিসিয়া ফলমূল ও শাকসবজি এবং কুয়েত মুরগির মাংসজাত খাবার, বিভিন্ন খাদ্যশস্য ও ভোজ্যতেল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বিশ্বজুড়ে এখন সরকারগুলোর প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- নিতপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কেননা, ক্ষুধার্ত জনগণ কখনও ক্ষমা করে না। আর কোনও সরকারই এই ঝুঁকির মুখোমুখি হতে চায় না। আর তাই মুদ্রাস্ফীতি আরও বেশি জাতীয়তাবাদী এবং প্রতিরোধী হতে সহায়তা করে। গুরুত্ব দেওয়া হয় অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে।

শুধু তা-ই নয়, মুদ্রাস্ফীতি কূটনীতিতেও পরিবর্তন আনতে বাধ্য করে। ইউরোপের দিকে তাকান। ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি এ যাবতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। ইউরোজোন বলতে- অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, সাইপ্রাস, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া এবং স্পেনকে বুঝায়। এটি মুলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই ১৯ দেশের একটি অর্থনৈতিক একটি ইউনিয়ন বা জোট। এই দেশগুলো প্রাথমিক মুদ্রা হিসেবে ইউরোকেই ব্যবহার করে। ইউনিয়নটি সৃষ্টির পর থেকে এই প্রথম সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মুখোমুখি হয়েছে দেশগুলো। ১৯৯৯ সালে ইউরো সৃষ্টির পর তিন দশকের চেয়েও সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে এই জোনে। এর একমাত্র কারণ যুদ্ধ।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপের ১০ দেশে পরিচালিত হয় একটি জরিপ, যা গত জুনে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি ইউরোপীয় চায় যত দ্রুত সম্ভব এই যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত। কেননা, এই যুদ্ধ তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

জানা গেছে, ইউরোপের ৪০ শতাংশ গ্যাস ও ২৬ শতাংশ জ্বালানি তেল আসে রাশিয়া থেকে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় দেশগুলো আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলো স্বয়ং ইউরোপীয়দেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আসছে শীতে বাড়িঘর উষ্ণ রাখতে তাদের গ্যাস দরকার। এই অবস্থা চলতে থাকলে গ্যাস-বিদ্যুতের বিল চরমে পৌঁছবে।

শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধের কারণে খাবারের দামও বাড়ছে। ইতালিতে পাস্তার দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। 

এরই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয়ানরা প্রায় সমানভাগে ভাগ হয়ে গেছে। তাদের একটি অংশের দাবি, এখনই ব্যয় ও খরচ কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। অন্য অংশটি বলছে- তারা ন্যায়বিচার চায়।

সম্প্রতি জি-৭ সম্মেলনের এই ব্লকের নেতারা যেকোনও মূল্যে যতদিন প্রয়োজন ইউক্রেনের পাশে থাকার এবং পুতিনকে আরও শাস্তির মুখোমুখি করার ঘোষণা দেন। কিন্তু ভোটাররা এই ব্যয় বহন করার পক্ষে নয়।

জরিপ বলছে- এই মুদ্রাস্ফীতি খুব শিগগিরই ইউরোপকে তাদের অগ্রাধিকারের (প্রায়োরিটি) বিষয়টি নিয়ে ভাবাবে। 

অগ্রাধিকার

মুদ্রাস্ফীতি ক্ষমতার বদল ঘটায়। শুধু জাতীয় অগ্রাধিকার নয়, বৈশ্বিক অগ্রাধিকারও এক্ষেত্রে জরুরি। যেমন: জলবায়ু পরিবর্তন এর অন্যতম উদাহরণ। যদিও জলবায়ুর কারণে বৈশ্বিক পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা প্রতিরোধ করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। তারপরও মুদ্রাস্ফীতির কারণে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত যেসব কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা হয়েছে, তার ফল উল্টো দিকে যাচ্ছে।

সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে এসেছে, “মুদ্রাস্ফীতির ব্যাপক প্রভাবের কারণে ২০২১ সালে এনার্জির ব্যবহার হিসেবে কয়লা শীর্ষস্থান দখল করে নেয়।”

“রাশিয়া গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় কয়লায় ফিরতে পারে ইউরোপ।”

“জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা আমলে না নিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ফের চালু করছে অস্ট্রিয়া।”

“বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ কয়লায় ফিরে যাওয়ায় জলবায়ু ঝুঁকির বিষয়ে সাবধান করে দিলেন বিশেষজ্ঞরা।”

“গ্যাসে বিনিয়োগ বন্ধের প্রতিশ্রুতি থেকে ফিরে এল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।”

এবার বুঝতে পেরেছেন গল্পটি? যখন মুদ্রাস্ফীতি এনার্জি খাতে হানা দেয়, তখন পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বেড়ে যায়। আর তখন বিভিন্ন দেশ সস্তা জ্বালানি কয়লার দিকে ঝুঁকে পড়ে। এমনকি এটি পৃথিবীকে দূষিত করবে জেনেও এই কাজ করবে তারা। এভাবে তারা জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও ত্বরান্বিত করবে।

কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে, মুদ্রাস্ফীতি এতটা পরিবর্তন ঘটাতে পারে? এটিই গল্পের মূল বিষয়। মুদ্রাস্ফীতির সংজ্ঞা এখন আরও ব্যাপক। এটা শুধু ক্রয়ক্ষমতা ও অ্যাকাউন্টে অর্থ থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মুদ্রাস্ফীতির মৌলিক অর্থ আসলে এটাই।

দারিদ্র

বর্তমান বিশ্বে ১.১ বিলিয়ন মানুষ তাদের খাদ্যের যোগান দিতে পারে না। সুতরাং এই বিপুল সংখ্যক মানুষ এখনও  দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। 

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার এই প্রবণতায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষ দারিদ্রের তালিকায় চলে যাচ্ছে। এটি সমাজে অপুষ্টি, গর্ভপাত ও শিশু মৃত্যু হার বৃদ্ধির মতো নানাবিধ সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করছে। এখানেই শেষ নয়, মুদ্রাস্ফীতির কারণে বাড়ছে অপরাধ ও বেকারত্বও। বলা যায়, মুদ্রাস্ফীতি এক ধরনের ক্রমাগত পরিবর্তনের জন্ম দিচ্ছে। সুতরাং খুব শিগগিরই এবং জরুরি ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা উচিত। সূত্র: ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজ

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর