সবুজের সমারোহ ও বিরল জীব বৈচিত্রের অভয়ারণ্য খ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব। প্রায় প্রতিদিনই এ সবুজ ক্যাম্পাস থেকে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার গাছ। এতে করে উজাড় ইচ্ছে পাহাড়ি ভূমি। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র। আবাসস্থল হারাচ্ছে শত শত প্রাণী। পশু, পাখি, পরিবেশ অধিক হারে নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন ও পরিবেশ বিশষজ্ঞরা।
গাছ পাচার বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাটহাজারি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়। কিন্তু পাচারকারীরা পুলিশের সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এ গাছ। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যাড অনভাইরনমেন্টাল সায়েন্স পরিচালক প্রফেসর ড. দানেশ মিয়া প্রকাশিত মানচিত্র থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০% বনভূমি উজাড় হয়েছে। মানচিত্রটি চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে হস্তান্তর করেন তিনি।
এদিকে, নানামুখি সমস্যার সম্মুখীন হয়ে নির্মিত সীমানা প্রাচীরও রক্ষা করতে পারছে না এ গাছ পাচার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত থেকে প্রতিনিয়তই বড় ছোট গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বহিরাগত একটি চক্র। এ চক্রের সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরীরাও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের হাত ধরেই গাছগুলো পাচার হয় বলেও জানা যায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন দেখেও না দেখার মতো করে রয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পাহাড়গুলোতে চলছে গাছ নিধনের মহোৎসব। গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাটছে না। বরং কাটছে বনদস্যুরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেই কোন দৃশ্যমান পদেক্ষেপ। গাছ পাচারের বিষয়ে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়টি আমরা জেনেছি। নি:সন্দেহে এটি মারাত্বক অপরাধ। যে বা যারা এ কাজের সাথে জড়িত তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান বজল হক বলেন, ‘ ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু গাছ জব্দ করেছি। প্রতিদিন পাহারা দিয়ে রাখা মুশকিল।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল