ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দল-মত নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। সকলে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করছেন।
সোমবার সকাল ১১টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান ও রিটার্নিং অফিসারগণ, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, সকল হলের প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক ও সহকারী আবাসিক শিক্ষক এবং ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি বলেন, অনেক শঙ্কা, সন্দেহ ও বিতর্কের পথপরিক্রমায় প্রায় তিন দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কোনো সন্দেহ নেই, এ দীর্ঘ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় তথা জাতি যত সংখ্যক অধিকতর দক্ষ ও নেতৃত্বের গুণাবলি সমৃদ্ধ ব্যক্তিত্ব পেতে পারত তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ বঞ্চনার সংস্কৃতি থেকে আমরা বের হতে সক্ষম হব। ডাকসু নির্বাচন যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘ক্যালেন্ডার ইভেন্ট’-এ পরিণত হয় সেজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকল মহলের আন্তরিক সদিচ্ছা ও সদয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন একেবারেই ক্রুটিমুক্ত নয় উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. মো, আখতারুজ্জামান বলেন, অনিচ্ছাকৃত বিভিন্ন ভুল-ক্রুটি হয়তো রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতায় কোনো ঘাটতি নেই। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে হতে যাওয়া নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও নিখাদ হওয়ার পথ তৈরি হল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি আচরণবিধি পালনে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্ম-সংস্কৃতির মতাদর্শের এক বিরাট পরিবার। পরস্পরের মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই গণতন্ত্রের মূল দর্শন। গঠিত কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত ও সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আচরণবিধি ২০১৯ কার্যকর রয়েছে। এ আচরণবিধি যথাযথভাবে পালন করা সংশিষ্ট সকলের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহাবস্থান তৈরিতে সাহায্য করায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনসমূহকে ধন্যবাদ জানান এবং তা সবসময় অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নির্বাচনে স্বাভাবিক জয়-পরাজয় মেনে নেওয়াকে উদারনৈতিক মূল্যবোধ হিসেবে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই মূল্যবোধ নেই তা যেন কেউ মনে না করতে পারে।
নির্বাচনকালীন ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ রাখার জন্য প্রক্টরিয়াল টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাহায্য করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য। আসন্ন এই নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব আরও বৃদ্ধি করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম