চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুটি উপ গ্রুপের মধ্যে টানা তিনদিন ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছেই। গত ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবি চত্বর থেকে এ সংঘর্ষের উৎপত্তি। পরে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাস জুড়ে। যার ফলে আতঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ৩১ মার্চ ফেসবুক পোস্টে রিয়েক্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের সিএফসি ও বিজয়। একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১মে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় উভয় গ্রুপ। একই ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ফের সংঘর্ষে জড়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে, সংঘর্ষ থামাতে বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। এ বিষয়ে হাটহাজারি মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীর বলেন, ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে ৩দিন ধরে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে আটক করি। সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রনে থাকলেও নিজেদের মধ্যে কোন্দল থামছে না।
সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুর রব হলের মাঠে খেলতে গেলে বিজয় গ্রুপের দর্শন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের আবু বক্করকে মারধর করে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজয় গ্রুপ সোহরাওয়ার্দী হল এবং সিএফসি গ্রুপ শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে তার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষ ব্যাপক ইট পাটকেল ছোড়াছুড়ি করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয় গ্রুপের নেতা ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর জীবন বলেন, সিএফসি গ্রুপের নেতাদের ছাত্রত্ব নাই। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের নেতা নওফেল ভাইয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে।
শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আমরা সব সময়ই সমাধানের চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু তারা বার বারই সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।
এদিকে, সোমবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালিয়ে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২৬ রাউন্ড গুলি এবং রামদা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাটহাজারী মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় রাতে একযোগে পাঁচটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালানো হয়। এতে আলাওল হলের ক্যান্টিনের পেছন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় দুটি এক নলা বন্দুক, থ্রি নট থ্রি বন্ধুকের ১২৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। তাছাড়া হলের বেশ কয়েকটি আবাসিক কক্ষ থেকে ১২টি রামদা, রড ও বিপুল পরিমাণ লাঠিসোটাও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।’
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর