‘ক্লিন কুকিং’ –এর এই নতুন ধারণা হলো প্রথাগত রান্নার ঠিক বিপরীত। এই পদ্ধতির রান্নায় থাকবে না জ্বালানি হিসেবে কাঠ-কয়লার ব্যবহার, থাকবে ধোঁয়ামুক্ত ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পরিপাটি একটি রান্নাঘর। এছাড়া ব্যয় ও সময় দু’টোই বাঁচবে, সর্বোপরি নিরাপদ হবে জীবন। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের ৮০ ভাগের বেশি রান্নাঘর এখনও নিরাপদ বা ক্লিন কুকিং এর আওতায় নেই। এসব অনিরাপদ রান্নাঘরে রান্না করার কারণে ধোঁয়া সহ নানা দূষণে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিবছর ৭৫ হাজারের বেশি নারী ও শিশু মারা যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এ ‘ক্লিন কুকিং’ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী তথা সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-তে আয়োজিত এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২৯ এপ্রিল যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে ক্লিন কুকিং অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ ও আইইউবি’র স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্ট। ক্লিন কুকিং অ্যালায়েন্সের তথ্য মতে রান্নাঘরের জ্বালানির কারণে একদিকে যেমন বন উজাড় হচ্ছে অন্যদিকে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও ক্ষতিকর কার্বণ নিসঃরণে বৈশ্বিক প্রায় ২৫ ভাগ অবদান এই রান্নাঘর থেকে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। ‘ক্লিন কুকিং’ বিষয়টি বর্তমানে অতি জনগুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি একে গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি রাজধানীর বস্তি এলাকাতেও প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানের চেয়ারপার্সন আইইউবি’র উপাচার্য অধ্যাপক এম. ওমর রহমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে রান্নাঘরের জ্বালানি হিসেবে কাঠ-কয়লা পোড়ানোর বিকল্প ব্যবহারের ওপর জোর দেন। সেমিনারে আরও বক্তৃতা করেন পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম এবং টোটাল বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুর মোর্শেদ সিদ্দিকি। বাংলাদেশে ক্লিন কুকিং এর চিত্র নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্লিন কুকিং অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আসনা তৌফিক। এছাড়া টোটাল বাংলাদেশের বিক্রয় ও বিপণণ বিভাগের প্রধান মুজবিুর রহমান এবং আইইউইবি’র স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজম্যান্টের ডিন ড. আব্দুল খালেক পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারের অন্যতম আকর্ষণ ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা। ক্লিন কুকিং এবং পরিবেশ বিষয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এতে বিজয়ী হন রাবিব হোসেন। প্রথম ও দ্বিতীয় রানার-আপ হন রিফা নানজিবা এবং তাসনিম হাসান। বিজয়ী প্রত্যেককে ক্রেস্ট ও উপহার দেয়া হয়।
আইইউইব’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মিলান পাগন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সিনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তা এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা