দীর্ঘ ১৮ দিন বন্ধ থাকার পর খুলেছে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আজ বুধবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেছে। যথারীতি ক্লাসও চলছে। তবে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক রিলেশন অফিসার মাহাবুবুল আলম সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রনালয় গত ৭ অক্টোবর রাতে অধ্যাপক ড. শাহজাহানকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এরপর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। বুধবার তিনি বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে তার অফিস কক্ষে সভা করেছেন। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ
নতুন ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারীতা, নারী কেলেঙ্কারী, স্বৈরনীতি ও কথায় কথায় অনৈতিকভাবে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবীতে তাঁর পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন এবং ওই দিন সকাল ১০ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত না মেনে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন। তখন সাবেক উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের মদদে বহিরাহতরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এতে ছাত্র-ছাত্রীসহ অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর উপাচার্যের পদত্যাগ আন্দোলন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিয়ে ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর ইউজিসি কর্তৃক গঠিত তদন্ত টিম গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তদন্তে আসেন। ২৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসি তদন্ত টিম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড.খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে অপসারণের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেন।
২৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের ১২তম দিনে রাতে উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন কঠোর পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। ১ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেন।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ