পাবিপ্রবি উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীর কাছে চাকরি প্রার্থীর ঘুষ ফেরত চাওয়ার অডিও ফাঁস তদন্তসহ ১২ দফা দাবি না মানায় উপাচার্য ও প্রশাসনের সকল কর্মকর্তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার বেলা ১২টায় দাবি পূরণের পূর্বঘোষিত আল্টিমেটাম'র সময়সীমা পার হওয়ায় উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া উপাচার্যের সাথে নিয়োগ প্রার্থী যুবকের অডিও বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন, তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, রিজেন্ট বোর্ডে নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি রাখা, ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য গবেষণা বরাদ্দ, খেলার মাঠ উপযোগী ও শহীদ মিনার নির্মাণসহ ১২ দফা দাবি দিয়েছিলেন তারা।
পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সের আহবানে মঙ্গলবার উপাচার্য এম রোস্তম আলীর সাথে বৈঠকে বসে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ কয়েকজন কর্মকর্তার দুর্নীতির বিষয়টি প্রমাণিত হলেও উপাচার্য তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন নি। দাবি পূরণেও কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন নি।
প্রতিনিধি দলের সদস্য মাহমুদ কামাল তুহিন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে উপাচার্য স্যারের সাথে বৈঠকে ছাত্রদের দাবির বিষয়ে কেবল আশ্বাস ছাড়া কোন লিখিত নির্দেশনা মেলে নি। ছাত্রকল্যাণ ফান্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার দুর্নীতি ও ব্যর্থতার প্রমাণ দিলে, উপাচার্য ক্ষোভ প্রকাশ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এসব দুর্নীতিতে স্যারের প্রশ্রয় ও সংশ্লিষ্টতা না থাকলে তিনি এমন স্ববিরোধী আচরণ কিভাবে করেন? আমরা অবিলম্বে উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলের পদত্যাগ চাই।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক নুরুল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য রোস্তম আলী স্যারের যোগদানের পর থেকে পাবিপ্রবি নিয়ে কোন ইতিবাচক সংবাদ শোনা যায় নি। দুর্নীতি, অনিয়ম, আর ব্যর্থতায় শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়লেও সেদিকে দৃষ্টি না দিয়ে উপাচার্য নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত আছেন। সম্প্রতি ঘুষ কেলেঙ্কারির অডিও ফাঁসের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতেই বিব্রত বোধ করছি।
এদিকে, ছাত্র আন্দোলনের কারণে বুধবারও কোন বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। বন্ধ ছিল মূল ফটক, প্রশাসনিক ও সকল একাডেমিক ভবন। দ্রুত সময়ের মধ্যে উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলীসহ প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। তবে, ছাত্রদের সাথে বৈঠক ও পদত্যাগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলী।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার
