চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার রূপ ধারণ করেছে। যুদ্ধ না হলেও একটি চরম মানবিক বিপর্যয় বলা চলে। এই বিপর্যয়ের শুরু থেকেই সার্বিক সহায়তা করার জন্য কাজ করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাধারণ থেকে রাজনৈতিক দলের কর্মী সবারই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপকহারে।
ঘটনার সময় থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাজ করে চলেছেন। ভয়াবহ সেই রাতের বর্ণনা দিচ্ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শহীদুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একজন কর্মী। এই বিপর্যয়ে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ কাজ করা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, খবর শুনেই ছুটে যাই চমেক হাসপাতালে। আমার বাসা শহরের ২ নম্বর গেইট এলাকায়। গিয়ে দেখি অ্যাম্বুলেন্স করে একের পর এক আগুনে দগ্ধ হওয়া মানুষ ঢুকছে হাসপাতালে। এর মধ্যে পোড়া লাশও ছিল, যাদের ধরতে অনেকেই ভয় পাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নিজেই নেমে পড়ি। একে একে ২০-২৫টি লাশ মর্গে রাখি।
ওখানে অনেক মানুষ ছিল, তবে অভিজ্ঞ মানুষ ছিল না। আমি কলেজ জীবনে যুব রেড ক্রিসেন্টে কাজ করায় এসব অভিজ্ঞতা ছিল। বর্তমানে বার্ন ইউনিটে ড্রেসিং করার জন্য সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত মানুষ হওয়াতে ওয়ার্ড বয়রা কাজ শেষ করতে পারছেন না। তাই একটু সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আলী তানভীর জানান, আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি স্যাভলন, টিস্যু, মাস্ক, পানি এবং হ্যান্ড গ্লোবসসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমরা সরবরাহ করছি। আমরা বুথ থেকে সর্বক্ষণ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই করছি।
মানবিক এ বিপর্যয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, শুরু থেকেই আমরা নেগেটিভ রক্তদাতাদের সহযোগিতা করেছি চমেক পৌঁছাতে। এছাড়াও বিভিন্ন হল থেকে আমাদের ছাত্রীরা খাবার রান্না করে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যা প্রয়োজন মনে হচ্ছে, তাই সরবরাহ করার চেষ্টা করছি সবার সহযোগিতা নিয়ে। এই সংকটে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই