জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসন সমস্যার সমাধান ও শিক্ষা ও গবেষণার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬টি হল নির্মাণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মেয়েদের ফজিলাতুন্নেছা হল ও ছেলেদের শেখ রাসেল হল যথাক্রমে চলতি বছরের ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি চালু করা হয়।
বলা হয়েছিল, হলগুলোতে বিনোদনের ব্যবস্থা, সমৃদ্ধ পাঠাগার, ব্যয়ামাগার, ডাইনিং, ক্যান্টিন, মসজিদ, চৌকি, চেয়ার-টেবিল ও আলমারি, সেলুন, লন্ড্রি, ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড সংযোগ সুবিধাসহ শিক্ষার সহায়ক সকল অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকবে। এরমধ্যে গুটিকয়েক ছাড়া অপূর্ণ রয়ে গেছে অধিকাংশ সুযোগ-সুবিধা। ফলে পড়াশোনায় ব্যাঘাতসহ তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল চালুর ৯ মাস পরও এসব সংকট না কাটার পেছনে প্রাশসনের স্বদিচ্ছা না থাকা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিই দায়ী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হল দুটিতে ১ হাজার করে মোট দুই হাজার শিক্ষার্থী থাকেন। প্রতিটি কক্ষে মোট ৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য পৃথকভাবে খাট দেওয়া হলেও দেওয়া হয়নি পড়ার চেয়ার-টেবিল ও আলমারি। চালু হয়নি হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিন। ফলে শিক্ষার্থীরা পার্শ্ববর্তী হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে যান খাবারের জন্য। এছাড়া শেখ রাসেল হলের সামনের রাস্তা বন্ধ থাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার পথ ঘুরে তাদেরকে বটতলায় খাবারের জন্য যেতে হয়। যেখানে তাদেরকে গুণতে হয় বাড়তি টাকা।
১০ তলা বিশিষ্ট হল দুটিতে শিক্ষার্থীদের ওঠা-নামার জন্য ৬টি করে লিফট চালু করার কথা থাকলেও চালু করা হয়েছে মাত্র ৪টি লিফট। ফলে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে ওঠানামার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আবার এসব লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়ে শিক্ষার্থীদেরকে কখনো কখনো ঘণ্টাখানেকের মতো আটকা থাকতে দেখা গেছে।
শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাকলায়েন মোস্তাক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের হলে ডাইনিং, ক্যান্টিন বন্ধ। খাবারের জন্য ১ কিলোমিটার হেঁটে বটতলায় যেতে হয়। এতে যেমন বাড়তি টাকা খরচ হয়, তেমনি প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবার হলের লিফটের সমস্যা, চেয়ার-টেবিল, আলমারি না থাকা এগুলো প্রচণ্ড পীড়াদায়ক। প্রশাসনের স্বদিচ্ছার অভাবের কারণে এতোদিনে এসব সমস্যা সমাধান হচ্ছে না।
তবে সংকটগুলো সমাধানে কোন গাফিলতি নেই বলে জানান সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ।
শেখ রাসেল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. তাজউদ্দিন সিকদার বলেন, লোকবলের অভাব ও গ্যাস সংযোগ না থাকায় ডাইনিং, ক্যান্টিন চালু করা যাচ্ছে না। এছাড়া চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের কাজ চলমান রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চেয়ার-টেবিল ও আলমারির টেন্ডার কাজ চলছে। এরজন্য আরও ২ মাস লাগবে। আর লিফটের সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে। ডাইনিং ক্যান্টিনসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো হল প্রশাসনের কাজ, ওইগুলো আমাদের দেখার বিষয় না।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত