১৮ জুলাই, ২০১৯ ২০:৫২

ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, ১২ দিন পর লাশ উত্তোলন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু, ১২ দিন পর লাশ উত্তোলন

আলোচিত স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ১২ দিন পর মৌলভীবাজার জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশনায় স্কুল ছাত্রীর কুলসুমা আক্তার তাসলিমার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। গত ৫ জুলাই কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের মহলাল (রফিনগর) গ্রামের জহুর উদ্দিনের মেয়ে কুলসুমা বেগম তাসলিমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে দাফন করে তার পরিবার। সে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। জন্ম নিবন্ধন অনুসারে তার জন্ম তারিখ ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।

তাসলিমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি বলে এলাকায় গুঞ্জন এবং জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে দাফনের তিনদিন পর রহস্যজনক মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি নজরে নিয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশ তদন্ত করে মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় গত ১২ জুলাই লাশ উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করে।

বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে মৌলভীবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নেছার উদ্দিনের উপস্থিতিতে লাশটি উত্তোলন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান, ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী প্রমুখ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন কুলাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী।

উল্লেখ্য, নওমুসলিম আব্দুল আজিজ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন তাসলিমাকে বিয়ে করার জন্য। আজিজ জানান, দুই বছর পূর্ব থেকে তাসলিমার সাথে তার প্রণয়ের সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টি তাসলিমার পরিবারের লোকজনও জানতেন। তাসলিমার মায়ের মৃত্যুর পর আর বাড়িতে গিয়ে তাসলিমার সাথে দেখা করা হয়ে ওঠেনি। বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাসলিমার বাবা জহুর উদ্দিন। এদিকে নওমুসলিম আজিজ (পূর্বের নাম লিটন দাস) বরমচাল ইউনিয়নের চন্দ্রখলায় নিজের পিতৃপরিচয়, বংশ, জাত-বর্ণ ত্যাগ করে থাকতেন বরমচাল কালামিয়ার বাজারে। সেখানে দেখা করতে আসাই কাল হয় তাসলিমার।

গত ৪ জুলাই সকালে বরমচাল কালামিয়ার বাজারে আজিজের সাথে দেখা করতে আসে তাসলিমা। কিন্তু সেখানে বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশ কয়ছর মিয়াসহ তাসলিমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে দিয়ে আসেন। এ বাড়ি ফেরাই ছিলো তার শেষ বাড়ি ফেরা। ওইদিন বিকালে হঠাৎ অসুস্থতার কথা বলে সিএনজি অটোরিকশা যোগে তাসলিমাকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় তার পরিবার। রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাসলিমার লাশ নিয়ে ফিরে তার পরিবার। তার পরিবার জানায়, স্ট্রোক করে তাসলিমার মৃত্যু হয়েছে। পরদিন শুক্রবার ৫ জুলাই সকাল ১১ টার দিকে দ্রুততার সহিত তাসলিমার দাফন সম্পন্ন করা হয়। তবে স্থানীয়রা জানান, তাসলিমার গালে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো। তারই সূত্র ধরে লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করা হলো।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর