একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বেশ স্বস্তিতেই সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের দিন কাটাচ্ছিল। নির্বাচনের আগে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় চললেও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তা স্থিমিত হয়ে পড়েছিল। ফলে গেল কয়েক মাস ধরে সিলেটে বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক চলাফেরাই করছিলেন। কিন্তু বিভাগীয় সমাবেশ ডাকায় যেন বিপদে পড়ে গেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
হঠাৎ করেই সিলেটে শুরু হয়েছে পুলিশের ধরপাকড়। গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে। এতে সিলেটে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে এই সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা। সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতকর্মীরা বক্তব্য রাখবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থানীয় নেতারা।
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের পর সিলেটে সবচেয়ে বড় এই রাজনৈতিক কর্মসূচি সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মী উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছিলেন। সিলেটজুড়ে চলছিল ব্যাপক প্রচারণা। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ পৌরসভা, উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সমাবেশের বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছিলেন।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে সিলেটের তিনটি উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অন্তত ১৬ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেটের জকিগঞ্জে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নোমান উদ্দিন মুরাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ও ওসমানীনগর উপজেলা থেকে পাঁচজন করে গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে।
এর আগে গ্রেফতার করা হয় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোতাকাব্বির সাকিকে। সংশ্লিষ্ট থানার ওসিরা গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হঠাৎ করে ধরপাকড় শুরু হওয়ায় সিলেটে বিএনপির নেতাকর্মীদের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র থাকছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, ‘বিভাগীয় সমাবেশের প্রচারণা চালানোর সময় এসব নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘সমাবেশ বানচাল করার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে, গণগ্রেফতার করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’
এদিকে, সোমবার দুপুরে সমাবেশস্থল সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠ পরিদর্শনে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হাসান জীবনসহ নেতাকর্মীরা।
এসময় ডা. জাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ সিলেট নগরী ও উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে। সরকার সমাবেশকে বাধাগ্রস্থ করতে চায়।’
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত