করোনার সংক্রমণ রোধে সোমবার (৪ এপ্রিল) থেকে সিলেটসহ সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ খবরে গত দু'দিন থেকে মানুষের মধ্যে সিলেট নগরী ছাড়ার হিড়িক পড়েছে।
এজন্য রবিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সিলেটের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশনের যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
রবিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাতে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশনের দিকে হন্তদন্ত ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের লক্ষ্য গন্তব্যের বাসে বা ট্রেনে ওঠা। লকডাউনের সময় কর্মহীন সময় কাটাতেই গ্রামের দিকে ছুটছেন তারা। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষেরা নগরী ছাড়ছেন। টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টার ও রেল স্টেশনে টিকেট কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
এদিকে, বাস টার্মিনালে অনেক যাত্রী ও টিকিট কাউন্টারে মানুষের ভিড়ে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। অনেকের মুখের পরিবর্তে থুতনিতে মাস্ক দেখা যায়।
জানা গেছে, শনিবার লকডাউনের ঘোষণা শোনার পরপরই কাউন্টারগুলোতে টিকিটপ্রত্যাশীরা যোগাযোগ করতে শুরু করেন। অনেকে আবার সপরিবারে ভোরে টার্মিনালে এসে টিকিটের জন্য অপেক্ষা করেন। তবে কাউন্টারগুলো থেকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে না। শুধু সরকারিভাবে যে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল তাই কাউন্টার থেকে নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সিলেট ছাড়তে হবিগঞ্জ যাওয়ার টিকিট কিনেছেন সবুজ মাহমুদ। তিনি বলেন, একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে চাকরি চলে যায়। করোনার প্রকোপ কমলে সিলেটে এসে বিভিন্ন জিনিস ফেরি করে বিক্রি করতে শুরু করেছিলাম। এখন সাতদিনের লকডাউন আসছে। সিলেটে বেকার বসে থাকতে হবে। আর লকডাউন যেহেতু বাড়তে পারে তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। সিলেটে থেকে টাকা আয় করতে না পারলে নিজের খরচ চালাবো কেমনে?
দিনমজুর ও ভ্যানচালক ইসরাফ মিয়া বলেন, করোনার এ সময়ে কাজ পাওয়া মুশকিল। লকডাউনের সময় প্রায় সবকিছু বন্ধ থাকবে। এতে আমাদের আয় ও রুটিরুজি হবে না। এজন্য গ্রামের বাড়ি জগন্নাথপুর চলে যাচ্ছি।
এদিকে সিলেটের কুমারগাঁও বাস টার্মিনালেও সকাল থেকে ঘরমুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শনিবার রাত থেকে বেড়েছে সুনামগঞ্জ বাস কাউন্টারে টিকিট বিক্রি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন