সিলেটে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনস্থ নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমনি নিবাসে (শিশু সদন) দুই মাস বয়সী এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনায় ছোটমনি নিবাসের আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ ধারণা করছে ওই শিশুকে বালিশচাপা দিয়ে সুলাতানা ফেরদৌসী খুন করেছেন।
আজ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে সুলতানাকে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা যায়, গত ২২ জুলাই রাতে ছোটমনি নিবাসে ২ মাস ১১ দিন বয়সী শিশু নাবিল আহমদ কান্নাকাটি করছিল। এতে বিরক্ত হয়ে আয়া সুলতানা ফেরদৌসী প্রথমে শিশুটিকে সজোরে ছুড়ে ফেলেন এবং পরে বালিশচাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘাতক আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার এসআই মাহবুব মন্ডল বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে অবুঝ শিশু নাবিলকে হত্যার পর ঘটনাটি গোপন রাখেন ছোটমনি নিবাসের দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ কারণে তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধেও নেয়া হতে পারে আইনি ব্যবস্থা- এমনটা জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ২৪ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-৪৫) দায়ের করা হয়। ময়নাতদন্তের পর নাবিলের মরদেহ দাফন করা হয়। নাবিল হত্যার বিষয়টি আড়ালেই থেকে যায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালি থানা পরিদর্শনে আসেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
এসময় শিশু নাবিলের অপমৃত্যু মামলাটি তার দৃষ্টিগোচর হয়। বিষয়টি তাঁর কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় রাত ১১টায় তিনি ছোটমনি নিবাসে ছুটে যান। সেখানে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর তাৎক্ষনিক আয়া সুলতানাকে আটকের নির্দেশ দেন তিনি।
এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম আবু ফরহাদ বলেন, আয়া সুলতানা শিশু নাবিলকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার বিষয়টি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর