সিলেটের বিশ্বনাথে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে বিয়ে ও গর্ভপাত করানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। গেল শনিবার (২১ আগস্ট) রাতে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর অভিভাবক পরিচয় দিয়ে লাশ নিয়ে পালানোর চেষ্টা চালান অজ্ঞাত এক নারী। রাতভর লাশবাহী গাড়ী নিয়ে ছুটাছুটির একপর্যায়ে উপজেলার লামাকাজি বাজারে লাশ আটক করে জনতা। তার আগেই সটকে পড়েন ওই নারী।
এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে বিয়ে ও গর্ভপাত করানোর দায়ে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হওয়া দুই বিয়াই কমলা মিয়া ও রইছ আলীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ মামলা নেয় থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের আবদুস সালামের স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা মখলিছুন (২৫) বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করতেন। লামাকাজি বাজারের নৈশ প্রহরী একই গ্রামের কমলা মিয়ার বাসায় কাজের সুবাধে তিনি তার সত্তরোর্ধ্ব বিয়াই উপজেলার সত্তিশ গ্রামের রইছ আলীর (৭০) সাথে মখলিছুনকে বিয়ে দেন। বিয়ের চার দিনের মাথায় রইছ আলী জানতে পারেন তার নব-বিবাহিতা স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। পরে দুই বিয়াই মিলে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করান তার। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর রইছ আলী তাকে নিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। পরে তার শারীরিক অবস্থা আরও নাজুক হলে ২০ আগস্ট শুক্রবার তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে পাঠান তার পিতা। ওইদিন রাতেই কমলা মিয়া ও তার বিয়াই রইছ আলীকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, গেল রাতে মখলিছুন মারা যাবার পর হাতপাতাল থেকে জনৈক নারী তার লাশ ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালান। অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় লামাকাজি বাজারে আটকানো হয়। এসময় আমি ও মখলিছুনের পিতা থানায় মামলা দায়েরে ব্যস্ত ছিলাম। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে পুলিশে খবর দেই। মখলিছুনের পিতা আবদুস সালাম বলেন, আমার অসহায় মেয়েকে তারা অবৈধ বিয়ে ও ধর্ষণ করে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ গাজী আতাউর রহমান ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে বলেন, গ্রেফতারকৃত দুই বৃদ্ধের বিরুদ্ধে আগেই মামলা নেয়া হয়েছে। এখন মামলায় হত্যাকাণ্ডের ধারা সংযুক্ত করতে আমরা কোর্টে আবেদন করবো।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন