ইউপি নির্বাচনে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সকল ইউনিয়নে দলীয় যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পায়নি আওয়ামী লীগ। কিন্তু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে নৌকার প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অভাব নেই। নির্বাচিত চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান অন্তত এক ডজন নেতা।
দলীয় মনোনয়ন পেতে তারা জেলা ও কেন্দ্রে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শেষবেলায় সিলেট নগরীর নিকটবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এই উপজেলায় কার হাতে উঠবে নৌকার টিকেট এনিয়ে চলছে রুদ্ধশ্বাস আলোচনা। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ত্যাগী ও পরীক্ষিত কাউকে বেছে নেয়া হবে এমন প্রত্যাশা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।
গত ২৯ জানুয়ারি প্রয়াত হন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের টানা দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল আহমদ চৌধুরী। আগামী ১৫ জুন এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফশিল ঘোষণার পরপর নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হয়ে ওঠেন আওয়ামী লীগের ডজনখানেক প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন পেতে তারা কেন্দ্র ও জেলায় তৎপরতা শুরু করেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. লুৎফুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা শাহিদুর রহমান চৌধুরী জাবেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর শাফি চৌধুরী এলিম ও সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন। এছাড়াও আরও কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
তবে ডজন খানেক নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা চান ত্যাগী ও পরীক্ষিত প্রার্থী। এ প্রসঙ্গে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা এমএ ওয়াদুদ এমরুল বলেন, ‘দুর্দিনে যারা দলে সক্রিয় ছিলেন, যারা ত্যাগী ও নির্যাতিত- তাদের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া উচিত। আওয়ামী লীগের সুসময়ে যারা বিভিন্ন দল থেকে এসে ‘লীগার’ হয়েছেন, তাদের মনোনয়ন দিলে তৃণমূলের কর্মীরা প্রাণশক্তি হারাবে।’
চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আমি রাজনীতি করে আসছি। সুসময়-দুঃসময়ে দলের সাথে ছিলাম। গোলাপগঞ্জের মানুষের সেবক হিসেবে এমনিতেই কাজ করছি। আশাকরি দল আমার অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনা করে হতাশ করবে না। তবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মাথা পেতে নেব।’
আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহিদুর রাহমান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে রাজনীতিতে আমার হাতেখড়ি। রাজনীতির ধারাবাহিকতায় এখন আওয়ামী লীগে যুক্ত আছি। গোলাপগঞ্জের মানুষকে স্বজন মনে করে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। তবে শেখ হাসিনা মনোনয়নের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মাথা পেতে মেনে নেব।’
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সব সময়ই তৃণমূলের মতামত নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হবে। দলের মনোনয়ন বোর্ডে পরবর্তীতে চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ করবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।’
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর