সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে যুবক রায়হান আহমদ খুনের মামলার প্রধান আসামি বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি বের হন।
এদিকে মামলার বিচারকার্যের দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগে আসামিরা জামিনে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহত রায়হানের মা সালমা বেগম। ছেলে হত্যার বিচার নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।
এসআই আকবর হোসেন ভূইয়ার জামিনের সত্যতা নিশ্চিত করে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ডেপুটি জেলার মনিরুল হাসান বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত হয়ে জামিনের কাগজ রবিবার আমাদের কাছে পৌঁছায়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে এসআই আকবরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকেই তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে তিনি বেরিয়ে যান।’
এসআই আকবরের জামিনে হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে তার ছেলে হত্যা মামলার আসামিরা জামিন পায়নি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েই একে একে মামলার আসামিরা জামিন পেয়ে মুক্ত হচ্ছে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে মামলার আসামী কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ ও কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস জামিন নিয়ে বের হয়ে দেশ থেকে পালিয়েছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। এবার প্রধান আসামি এসআই আকবরও জামিনে বের হয়েছেন। আসামিরা মুক্ত হওয়ায় তিনি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি বলেন, মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণেই আসামিরা জামিনে মুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এখন বিচার পাওয়া নিয়েও তিনি শঙ্কিত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট কোতোয়ালী থানাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে নগরীর আখালিয়ার রায়হান আহমদ নামের এক যুবককে নির্যাতন করা হয়। পরদিন ১১ অক্টোবর ভোরে গুরুতর অবস্থায় তাকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় পিবিআই। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফাঁড়ির টুআইসি এসআই মো. হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল