সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র ও রেলওয়ে বাংকার এলাকায় অবৈধ পাথর উত্তোলনের ঘটনায় পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভয়াবহ ক্ষতির প্রেক্ষিতে গণশুনানি আয়োজন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি।
বুধবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত এই গণশুনানিতে সভাপতিত্ব করেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও।
গণশুনানিতে অংশ নেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর, ট্রাক পরিবহন মালিক সমিতি, পাথর ব্যবসায়ী সমিতি, পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাংবাদিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা, তথ্য ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা করেন।
তদন্ত কমিটি মঙ্গলবার থেকে সরেজমিন তদন্ত শুরু করে, যার অংশ হিসেবে তারা সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শনও করেছেন। উল্লেখ্য, ২০ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে এই কমিটি গঠিত হয়।
এর আগেই সাদাপাথর লুটপাট সংক্রান্ত একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের অনুসন্ধানে সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীসহ ৫২ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি-সহ প্রশাসনের অনেককেই অভিযুক্ত করা হয়েছে।
দুদকের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন গঠিত আরেকটি তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদন দিয়েছে, যেখানে শতাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তবে নাম প্রকাশ করা হয়নি।
পাথর লুটপাটে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, দায় এড়াতে বিভিন্ন মহলের একে অপরকে দোষারোপ ও দীর্ঘদিন ধরে চলমান অনিয়মের বিষয়টি গণশুনানিতে বারবার উঠে আসে। তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সকল তথ্য ও বক্তব্য যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দ্রুত সময়ের মধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত