৪ জুলাই, ২০২২ ২০:২৪

ট্রেনের টিকেট কালোবাজারির দায়ে র‌্যাবের জালে আটকে গেল ‘খোদ’ রেলের স্টাফ!

চট্টগ্রামে ট্রেনের টিকেটসহ আরএনবির দুই সদস্য আটক

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

ট্রেনের টিকেট কালোবাজারির দায়ে র‌্যাবের জালে আটকে গেল ‘খোদ’ রেলের স্টাফ!

কোরবানির ঈদ এবং রমজানের ঈদের প্রতি বছরই ট্রেনের যাত্রীদের টিকেটের চাহিদা বেশি থাকে। সেই কারণে রেলওয়ে প্রশাসন নানা উদ্যোগও নিয়ে থাকেন যাত্রীসুবিধার জন্য। কিন্তু সেই সুবিধাকে পুঁজি করে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারিরাও সক্রিয় হয়ে উঠে। নানা কৌশলে রেল প্রশাসনের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারি টিকেট কালোবাজির সঙ্গে জড়িত থাকে। ঠিক তেমনি এবারও থেমে থাকেনি ট্রেনের টিকেট কালোবাজারিরা। বাইরের লোকের পাশাপাশি রেলের কর্মচারিরাও জড়িত হয়ে পড়েছেন টিকেট কালোবাজির সঙ্গে। এবার কৌশলে র‌্যাবের জালে আটকে গেল  ‘খোদ’ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন হাবিলদার ও একজন সিপাহী।

সোমবার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ। তিনি বলেন, এর আগে রবিবার রাতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এলাকায় বেশি দামে টিকেট বিক্রি করার সময় কৌশলে ধরা পড়ে যান নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) দুই সদস্য হাবিলদার রবিউল ইসলাম ও সিপাহী ইমরান হোসেন। তারা ৩৪৮ টাকার টিকিট ১ হাজার টাকায় বিক্রি করতে গিয়ে আটক হন তারা। ঢাকাগামি ট্রেনের ৯টি টিকেটসহ চট্টগ্রাম স্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ঈদ যাত্রাকে সামনে রেখে টিকিট কালোবাজারি করছিলো এই দুই সদস্য। নজরদারির পর টিকিট বিক্রির সময় হাতেনাতে আটক করা হয়।  

আরো জানা গেছে, টিকেট কালোবাজারীরা কৌশলে এসব কাজ করে থাকেন। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের কয়েকজন বুকিং সহকারির সহযোগিতায় কাউন্টার থেকে প্রতিদিনই নিরাপত্তা বাহিনী, জিআরপি পুলিশের সদস্যরা উর্ধ্বতন অফিসারদের প্রয়োজনের অজুহাত তুলে। তাছাড়া অন্য নামেও টিকেট সংগ্রহ করেন নানা অভিযোগে সিজিপিওয়াইতে সদ্য বদলিকৃত সিপাহী রহিমসহ আরো অনেকেই। এসব টিকেট সংগ্রহ করে আটককৃত রবিউল, ইমরানসহ আরো অনেকের মাধ্যমে বিক্রয় করেন বেশি দামে। এসব টিকেট বিক্রয় করে বুকিং সহকারিদের কাছেও একটা ভাগ চলে যায়। সিপাহ রহিমকে আটক করলে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এখানে মেইলের কাউন্টার থেকে শুরু করে কয়েকটি কাউন্টারে বেশি দামেও টিকেট বিক্রয় করেন যাত্রীদের কাছে। মেইলের প্রতিটি টিকেট ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি নেন বুকিং সহকারিরা। এসব নিয়ে আরএনবি স্টেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতিবাদ করলে উল্টো বদলি করে দেয়ারও হুমকি দেন তারা। ফলে থেমে থাকে না কালোবাজি সিন্ডিতেটের টিকেট ব্যবসাও। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ রেলের অনলাইন সার্ভার সহজের (সাবেক সিএনএস) চিহ্নিত কর্মচারী এবং রেলওয়ের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ রয়েছে। তারাই কৌশলে টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজারিদের হাতে তুলে দেয়। ইতিমধ্যে কালোবাজারীসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে আরএনবির প্রধান জহিরুল ইসলামের নির্দেশে কিছু আরএনবির সদস্যকে বদলী করলেও কৌশলে স্টেশনে এসে অনিয়ম-কালোবাজারী করেই চলেছে। এর আগে গত ১ এপ্রিল চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে টিকিট কালোবাজারি চক্রের দুই সদস্যকেও আটকের পর তারা জানায়, খোদ রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই তাদের টিকিট বিক্রির জন্য দেয়।

বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর