চট্টগ্রামের আউটার স্টেডিয়াম ফের ফিরছে নতুন রূপে। মাঠকে ঘিরে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে কাজ। ইতিমধ্যে মাঠকে ঘিরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন।
চলতি সপ্তাহে আউটার স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর ও মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু হবে। এ মাঠে সারা বছর লেগে থাকতো নানা মেলা। বছরের অর্ধেক সময় চলতো বাণিজ্য মেলা, শিল্প মেলা, গরু মেলা, পণ্য মেলা, বৃক্ষ মেলা, বিজয় মেলা, তাঁত শিল্প মেলাসহ হরেক রকম মেলা। ফলে যে মাঠে খেলে উঠে এসেছেন আকরাম, নান্নু, আশিষ ভদ্র, তামিম, আফতাবদের মতো খেলোয়াড় সে মাঠে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না এ প্রজন্ম।
অবশেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের প্রচেষ্টায় সগৌরবে ফিরছে আউটার স্টেডিয়াম মাঠ।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রামে খেলার মাঠ এমনিতেই সংকট। যে মাঠ আছে তা আমরা পুনরুদ্ধার করে খেলার উপযোগী করে তোলার কাজ করছি। দীর্ঘদিন ধরে আউটার স্টেডিয়াম মাঠটি খেলার চেয়ে মেলার দখলে ছিল বেশি। এ প্রজন্মের অনেকে জানেন না এ মাঠে খেলেই আজকে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় হয়েছেন এই চট্টগ্রামের সন্তান আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আশিষ ভদ্র, তামিম ইকবাল, আফতাব আহমেদরা। তাই নতুন প্রজন্ম যেন এ মাঠে খেলে নিজেদেরকে তৈরি করতে পারে সে জন্য নতুন আঙিয়ে আউটার স্টেডিয়াম সাজানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সপ্তাহে আউটার স্টেডিয়াম মাঠে নতুন করে সীমানা প্রাচীর ও মাঠ সংস্কার করা হবে। এরপর মাঠের একপাশে ২শ’ আসন বিশিষ্ট দর্শক গ্যালারি হবে। মাঠের সার্কিট হাউজ প্রান্ত ও নুর আহমদ চৌধুরীর প্রান্তে হবে ওয়াকওয়ে। এছাড়া বাকি জায়গায় টয়লেট সুবিধা, ড্রেসিং রুম এবং বসার জায়গা থাকবে।
সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, আসন্ন বর্ষার আগেই মাটি ভরাট ও পুরো মাঠে সবুজ ঘাস লাগানো হবে। ইতিমধ্যে মাঠের চারপাশে ফেন্সিং দিয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
নকশাকার স্থপতি আশিক ইমরান জানান, ‘আউটার স্টেডিয়ামের বর্তমান আয়তন ১১ হাজার বর্গফুট। এরমধ্যে ৮ হাজার বর্গফুটে হবে ফুটবল খেলার মাঠ। মাঠের চারপাশে ক্রিকেট নেট প্র্যাকটিস, ভলিবলসহ নানা খেলাধুলার জন্য ব্লক থাকবে। সুইমিং পুলের দেয়ালের দিকে হবে নেট প্র্যাকটিস ব্লক।
ক্রীড়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আউটার স্টেডিয়াম মাঠের সাথে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাস ওতপ্রোতেভাবে জড়িত। চট্টগ্রামের খেলাধূলার ভবিষ্যত অনেকটা এ মাঠের ওপর নির্ভর করে। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম ফখরুজ্জামান ও আ.জ.ম নাছির উদ্দীন সেই ভবিষ্যতকে আরো স্বপ্নময় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা ক্রীড়াঙ্গনের ইতিহাসে আগামী লিপিবদ্ধ থাকবে। জনবান্ধব এ উদ্যোগের পাশাপাশি শহরে মাঠের যে সংকট তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আরও যে সব মাঠ দখলকৃত আছে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। তাহলে অতীতের মতো দেশের ক্রীড়াঙ্গনে চট্টগ্রাম থেকে ভবিষ্যতে আমরা আকরাম-তামিমদের মতো খেলোয়াড় পাবো।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত