স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের ২৫ ভাগই স্তন ক্যান্সারে (ব্রেস্ট ক্যান্সার) আক্রান্ত। এ ঘাতক রোগ থেকে দেশকে মুক্ত করতে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাস জুড়ে বিনামূল্যে এই ক্যান্সার নির্ণয়ের চিকিৎসা (মেমোগ্রাম) দেওয়া হবে। এসময় প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ এবং সিসিইউ সেবা ছড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন মন্ত্রী।
আজ সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সম্মেলন-২০১৫’ এর উদ্বোধনী অন্ষ্ঠুানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ব্রেস্ট ক্যান্সার স্টাডি ফোরাম’ এবং ‘সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ’ যৌথভাবে এ সম্মেলনটি আয়োজন করে।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ রিচার্ড লাভ, বাংলাদেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এম এ হাই, অধ্যাপক ডা. সানোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর, অধ্যাপক ডা. আজম মোশতাক হোসেন ও অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা। ভারত, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন সহ বিভিন্ন দেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা এই সম্মেলনে অংশ নেয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমাদের তুলনায় বাংলাদেশি নারীরা কম বয়সে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দেশের নারীরা সচেতনার অভাবে এই রোগের চিকিৎসা নেয় না। এছাড়া গরীব পরিবারের অনেকেই অর্থের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না। তাই সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে (যেখানে মেমোগ্রামের যন্ত্রপাতি রয়েছে) প্রতি ডিসেম্বর মাসে বিনামূল্যে এই রোগ শনাক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা পোলিওমুক্ত হয়েছি। ইবোলা ভাইরাস ভারতে আসলেও আমাদের দেশে আসতে পারেনি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সব কিছুকে জয় করতে পারি। তাই বাংলাদেশকে স্তন ক্যান্সারমুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, এখন অনেক মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ দিতে চান না। শিশুদেরকে বাজার থেকে এনে দুধ খাওয়ান। যারা বুকের দুধ সন্তানকে খাওয়ান, তাদের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাদের শিশুরাও রোগে আক্রান্ত কম হয়।
ডাক্তারদের দায়িত্বশীলতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে একটি পত্রিকায় দেখলাম সম্ভ্রান্ত পরিবারের এক সন্তানকে একটি বিখ্যাত হাসপাতালে ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা করেছেন। তারা ডেঙ্গু আক্রান্ত ওই সন্তানকে চিকিৎসা দিয়েছেন। অথচ প্যারাসিটেমল আর বিশ্রাম নেওয়া ছাড়া এই রোগের আর কোন চিকিৎসা নেই। শেষ পর্যন্ত ভুল চিকিৎসার কারণে সে মৃত্যুবরণ করে। তবে মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ শিশুকে সুস্থ করে তোলে আমাদের চিকিৎসকরাই বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩০ অক্টোবর ১৫/ সালাহ উদ্দীন