ঢাকার পর এবার চট্টগ্রামে ভবন থেকে পড়ে এক কিশোরী গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মহানগরীর কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলির মুখে নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবনের উপর থেকে পড়ে ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে বুলবুল (১৪) নামে মেয়েটি পাঁচতলার উপর থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। রাত ২টার দিকে হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত কিশোরী স্থানীয় বাসিন্দা সুবিমল কান্তি দাশ ও পান্না ধর দম্পতির বাসায় দীর্ঘদিন ধরে গৃহ পরিচারিকা হিসেবে কাজ করে আসছিল। এ দম্পতির দাবি তাদের কাজের মেয়েটিকে কেউ পাঁচতলার উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছে।
গৃহকর্ত্রী পান্না ধর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভবনটি নির্মাণাধীন থাকায় ওখানে শ্রমিকেরা রাতে থাকে। হয়তো তাদের কেউ কিংবা অন্য কেউ তাকে (কিশোরীকে) ডেকে নিয়ে ফেলে দিয়েছে বলে আমার ধারণা।
তবে পুলিশ বলছে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কোন প্রমাণ তারা পায়নি। হয়তো মেয়েটি কোন কারণে পড়ে গেছে কিংবা সে নিজেই লাফ দিয়েছে।
এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেও মেয়েটি পাঁচতলায় লাফালাফি করেছে। লাফ দেব লাফ দেব বলে চিৎকার করেছে। তার কিছুক্ষণের মধ্যে রাস্তার উপর পড়ে তার দেহ। নিচে পড়েই তার দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। লোকজন ধরাধরি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কেউ কেউ পড়ে যাওয়া ভবনের উপরে উঠে দেখেছে কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলেছে কিনা। কিন্তু ওই ভবনের উপরে কাউকে দেখা যায়নি।
এদিকে মেয়েটি কেন 'লাফ দেব', 'লাফ দেব' বলে চিৎকার করছিল? সে কি কারও কাছ থেকে বাঁচার জন্য এ কথা বলছিল? এত রাতে মেয়েটি ওই নির্মানাধীন ভবনে কেন গিয়েছিল? যে ভবনে শ্রমিকরা থাকতো, ঘটনার পর সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া গেল না কেন?- এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে স্থানীয়দের মুখে মুখে।
স্থানীয় আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, হাজারীর গলির মুখে নির্মাণাধীন ভবনের ওপর থেকে মেয়েটিকে কেউ ফেলে দিয়েছে বলে আমার ধারণা। নির্মাণাধীন ভবনের পাশের একটি ভবনে ওই কিশোরী কাজ করতেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়েছে। তবে আমরা প্রকৃত ঘটনাটি জানার চেষ্টা করছি।
কোতোয়ালি থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, রাতে ‘হাজারীগলিতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে কিশোরী গৃহকর্মী মারা গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। এলাকার কেউ কেউ বলছে কিশোরীকে কেউ ভবনের উপর থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছে। তবে পুলিশ তদন্ত করে তেমন কোন আলামত পায়নি। এর পরও আমাদের অনুসন্ধান চলছে। কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ