অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনা শেষে প্রবীণ-নবীনে মিলে চট্টগ্রামের ৮ জন ‘ভাগ্যবান’ নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, নির্বাহী পরিষদের বিভিন্ন পদে স্থান পেয়েছেন। শনিবার চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণও করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নব-নির্বাচিত সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের ছবিসহ ছাপানো হয়েছে নেতা-কর্মীদের পোস্টার, ব্যানারও।
এছাড়া আগামী ১২ নভেম্বর নগরীর লালদিঘি মাঠে চট্টগ্রাম থেকে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় নেতাদের সংবর্ধনা দেবে আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার তিন সাংগঠনিক কমিটি। শনিবার দুপুরে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এ সময় তিন সাংগঠনিক কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার বিকালে ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার সন্তান আমিনুল ইসলাম আমিন উপ-প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গত দু'বার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। এবার পেলেন উপ-প্রচার সম্পাদকের পদ। শনিবার তাঁর নাম ঘোষণার পর সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণও করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রামের অন্য নেতাদের নাম ঘোষনায়ও খুশী নেতাকর্মীদের মাঝে।
নব ঘোষিত কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এতো বড় দায়িত্ব দেয়ায় প্রথমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মাননীয় সভানেত্রী, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। অতীতের মতো দলের প্রতি আনুগত্য ও সাংগঠনিক দক্ষতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। নেত্রীর আস্থা এবং বিশ্বাসের সাথে কাজ করতে পারি সেসব কাজ করে যাবো। তবে অতীতের মতো দলের প্রতি আনুগত্যে থেকে আমৃত্যু কাজ করে যাবেন বলে জানান উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদেরও প্রশাসক এমএ সালাম বলেন, জাতীয় সম্মেলন ঘিরে চট্টগ্রামে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে আনন্দের বন্যা বয়েছিল তা কমিটি গঠনের পরও অব্যাহত রয়েছে। আমরা খুশি। গতবারের চেয়ে এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পদ আমরা পেয়েছি। আগামী ১২ নভেম্বর নগরীর লালদিঘি মাঠে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি জনসভায় রূপ নিতে পারে। ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উত্তর-দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ সংবর্ধনা দেবে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রবীন-নবীনে মিলে চট্টগ্রামের মোট ৮ জনকে বিভিন্ন পদে স্থান দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা এবং গৃহায়ন ও গণর্পূতমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে রাঙ্গুনিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. হাসান মাহমুদ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামীলীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-প্রচার সম্পাদক পদে আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেন লোহাগাড়ার ব্যরিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তাছাড়া উপদেষ্টামণ্ডলীতে আবারও স্থান পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মো. ইসহাক মিঞা, সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন এবং ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া। তিনজনই গত কমিটিতেও উপদেষ্টামণ্ডলীতে ছিলেন। চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক জেলার বাইরে রাঙামাটির সাবেক সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছেন।
গতবারের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর এমপি ও নির্বাহী সদস্য ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এখনো কোনো পদ পাননি। তবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে কয়েকটি পদ খালি রয়েছে। নেতাকর্মীরা আশা করছেন চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেতে পারেন। এর আগে গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর ঢাকার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৯ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ